প্রতীকী ছবি।
নতুন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা শুরু হতে ঠিক এক সপ্তাহ বাকি। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও নতুন। কিন্তু নতুন মাধ্যমের পাঠ্যবই এখনও তাঁদের হাতে পৌঁছয়নি। শিক্ষা সূত্রের খবর, বুধবার কসবার শিক্ষা ভবনে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ শিবিরে স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের এ কথাই জানিয়েছেন ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কর্তারা তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন, স্কুলে স্কুলে বই পৌঁছতে শুরু করেছে। তাঁরা দ্রুত নতুন বই হাতে পেয়ে যাবেন।
কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না জানান, এ দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে ১৬১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা যোগ দিয়েছিলেন। ‘‘সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন ঐতিহাসিক ঘটনা। স্বাধীনতার পরে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা খুদে পড়ুয়াদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এবং ইংরেজি মাধ্যমে পড়াবেন। ওরা আনন্দের সঙ্গে মাতৃভাষার মতোই ইংরেজিটা শিখবে,’’ বলেন কার্তিকবাবু।
স্কুলশিক্ষা নিয়ে সরকারের তৈরি বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য রাহুল গুহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা যে-বয়সের পড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন, সেই বয়সের ছেলেমেয়েরা যে-কোনও ভাষা শিক্ষার পক্ষে আদর্শ। গল্প করার ছলে ছোট ছোট সহজ ইংরেজিতে কথা বলুন পড়ুয়াদের সঙ্গে। ক্লাসে একসঙ্গে মিলে নতুন নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন।’’ রাহুলবাবুর মতে, সরকারি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের বাড়িতে ইংরেজি জানা অভিভাবকের সংখ্যা কম। তাই ওই সব ছাত্রছাত্রীকে ইংরেজি শেখানোর জন্য ভরসা একমাত্র স্কুলের শিক্ষকেরাই।
আগামী ২ জানুয়ারি ৬৫টি সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমেও পঠনপাঠন শুরু হচ্ছে। স্কুলশিক্ষা দফতরের খবর, আরও পাঁচটি স্কুলে এই পঠনপাঠনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। সারা রাজ্যে ধাপে ধাপে এই ধরনের ১০০টি স্কুল চালু করা হবে।
মজারু, কুটুমকাটাম
ছবিতে গল্পের বই ‘মজারু’। পরিবারের কোন সদস্যকে ইংরেজিতে কী বলে, তা চেনাবে ‘কুটুমকাটাম’। এই দু’টি নতুন ইংরেজি বই দিয়ে শুরু হচ্ছে সরকারি ইংরেজি মাধ্যম প্রাক্-প্রাথমিক স্কুলের পড়াশোনা। রাজ্য পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বুধবার বলেন, ‘‘২০১৩ সালে সরকারি প্রাক্-প্রাথমিক স্কুল চালু হলেও এত দিন ইংরেজিতে কোনও বই ছিল না। অথচ ওই স্তরে ইংরেজি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এই বই চালু হলে খুদেদের ইংরেজি শিক্ষা প্রাক্-প্রাথমিক স্তরেই শুরু হবে।’’
শিক্ষা সূত্রের খবর, শিক্ষক ক্লাসে এসে খুদেদের মজারু বইয়ের ছবি দেখিয়ে গল্পটা বোঝাবেন। পড়ুয়া ছবি ও গল্প কতটা বুঝতে পারল, পরীক্ষা করবেন তিনিই। গল্প বলা বা প্রশ্নোত্তর হবে ইংরেজিতে। খুদে পড়ুয়ারা যদি ইংরেজিতেই উত্তর দিতে পারে, তা হলে বোঝা যাবে, সে শিক্ষকের কথা বুঝতে পারছে। সে বুঝতে না-পারলে আরও সহজ ইংরেজিতে বুঝিয়ে দেবেন শিক্ষক।
অভীকবাবু বলেন, ‘‘ইংরেজি শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। প্রাক্-প্রাথমিকে ভর্তির বয়স পাঁচ বছর। ওই বয়স থেকে পড়ুয়ার কানে ইংরেজি শোনার অভ্যাস তৈরি করতেই এই উদ্যোগ।’’
প্রাক্-প্রাথমিকের ইংরেজি কী ভাবে পড়ানো হবে, তার জন্য ‘বিহান’ নামে একটি বই প্রস্তুত করেছে পাঠ্যক্রম কমিটি। কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বলেন, ‘‘খেলাচ্ছলে খুদেদের শেখানোর জন্যই তৈরি হয়েছে বিহান নামের বইটি।’’