ফাইল চিত্র।
তাদের দেশের ছেলেমেয়েরাও পড়তে আসবেন কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমনই পরিকল্পনা ছিল আফগানিস্তানের সদ্য প্রাক্তন হয়ে পড়া সরকারের। সেই উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৯ সালে রবীন্দ্রভারতী পরিদর্শনে এসেছিলেন আফগান উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আব্দুল তাওয়াব বালাকারজাই।
সেই পরিচয়ের সূত্রেই সম্প্রতি পরপর দু'দিন বালাকারজাইকে ফোন করেছিলেন রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী। এমন একটা সময়ে, যখন তালিবানের দাপট তীব্র হয়ে উঠছে, কাবুলে পৌঁছে গিয়েছে তালিবান বাহিনী। সব্যসাচীবাবু বৃহস্পতিবার জানান, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি যে কতটা উদ্বেগজনক, তা নিয়ে দু'দিনই বালাকারজাইয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। সে-দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি ভীষণ চিন্তিত, জানিয়েছেন বালাকারজাই।
তালিবান হানার খবর পেয়ে গত রবি ও সোমবার বালকারজাইকে ফোন করেছিলেন উপাচার্য। কিন্তু তার পরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ ছেড়ে পালান। কাবুলের সম্পূর্ণ দখল নিয়ে নেয় তালিবান। তার পর থেকে বার বার চেষ্টা করেও তিনি ফোনে বালকারজাইকে ধরতে পারেননি বলে জানান উপাচার্য। তিনিও বেশ চিন্তিত।
কন্দহর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য বালাকারজাই সেখানকার জলসম্পদ ও পরিবেশ-প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান হিসেবেও কাজ করেছেন। ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর রবীন্দ্রভারতীর জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে এসেছিলেন তিনি। পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। তার পরে রবীন্দ্রভারতীর সঙ্গে তাঁর সরকারকে যুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। আফগান ছাত্রছাত্রীরা যাতে রবীন্দ্রভারতীর চারুকলা ও দৃশ্যকলা বিভাগে পড়ার সুযোগ পান, সেই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এই ব্যাপারে চলতি মাসেই কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি ‘মৌ’ বা সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করার কথা ছিল রবীন্দ্রভারতীর।
সব্যসাচীবাবু জানান, সমঝোতা আরও আগে হয়ে যেতে পারত। কিন্তু করোনার জন্য বিষয়টি কিছুটা বিলম্বিত হয়ে পড়ে। তার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমতি নেওয়ার একটা ব্যাপারও ছিল। "পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেটা পুরোপুরি ভেস্তে গিয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এই ধরনের উদ্যোগ আর চালানো যাবে কি না, তা বলা যাচ্ছে না," বললেন উপাচার্য।