Barasat

ট্যাবের টাকা পাইয়ে দিতে পড়ুুয়াদের টোপ

প্রলোভন দেখানো এমন মেসেজ এসেছে শিক্ষিকাদের ফোনেও।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩৩
Share:

পাঠানো হচ্ছে এমন বার্তা।

পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাসের সুযোগ করে দিতে ট্যাব কেনার টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু পড়ুয়াদের অনেকের কাছেই মোবাইল বা ট্যাব রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ট্যাব না কিনেও পড়ুয়ারা পেয়ে যেতে পারে জিএসটি বিল। যা জমা দিয়ে পকেটে পোরা যাবে সরকারি সাহায্যের টাকা। জালিয়াতির এমনই সব হদিস দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ-বার্তা আসছে বারাসতের একটি স্কুলের পড়ুয়াদের মোবাইলে।

Advertisement


প্রলোভন দেখানো এমন মেসেজ এসেছে শিক্ষিকাদের ফোনেও। পড়ুয়া ও শিক্ষিকাদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পরেই বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কালীকৃষ্ণ বালিকা বিদ্যালয় নামে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে নম্বর থেকে এমন ‘অফার’ দেওয়া হচ্ছিল, অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকে সেটি বন্ধ। জেলা প্রশাসনও কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে।


গত প্রায় দশ মাস ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ। স্মার্টফোন বা ট্যাব না থাকায় পড়ুয়াদের অনেকেই অনলাইন ক্লাস করতে পারছে না। সেই কারণেই উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়ারা যাতে অনলাইন ক্লাস করতে পারে, তার জন্য তাদের ট্যাব কেনার টাকা দিচ্ছে সরকার। পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে পাঠানো শুরু হয়েছে। পরবর্তীকালে ওই ট্যাব উচ্চশিক্ষার কাজেও লাগবে।ট্যাবের টাকা পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ঢুকতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা প্রতিক্রিয়া আসছে। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে পড়ুয়ারা ডিজে বাজিয়ে উল্লাস করেছে। কিন্তু বারাসতের মতো অভিযোগের কথা এখনও পর্যন্ত শোনা যায়নি।

Advertisement


কালীকৃষ্ণ বালিকা বিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে বলা হয়, এখন কমবেশি সকলের কাছেই মোবাইল রয়েছে। ফলে নতুন করে ট্যাব কেনা অর্থহীন। অথচ, বিল জমা দিতে হবে। সেই সমস্যার সমাধান তারা করে দেবে। কিছু না কিনলেও পাওয়া যাবে জিএসটি বিল। তবে তার বিনিময়ে কত টাকা তাদের দিতে হবে, সে কথা লেখা নেই এসএমএসে। কয়েক জন পড়ুয়া ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে তাদের জানানো হয়, আড়াই-তিন হাজার টাকা দিলেই জিএসটি বিল পাওয়া যাবে। এমনকি, প্রতি বিলে ক্যাশব্যাক অফারও দেওয়া হয়। কোনও পড়ুয়া তেমন বিল নিয়েছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।


পড়ুয়াদের পাশাপাশি কিছু শিক্ষিকাও এই বার্তা পেয়েছেন। কেন তাঁদের এমন বার্তা পাঠানো হল, তার ব্যাখ্যা মেলেনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমি সেনগুপ্ত জানান, নিয়ম অনুযায়ী ট্যাব কেনার বিল পাঠাতে হয় সরকারের কাছে। সেই জন্য ছাত্রীদের কাছে বিল চাওয়া হয়। তখনই ছাত্রীরা তাঁকে জানায়, তাদের নানা রকম টোপ দেওয়া হচ্ছে। তার পরেই তিনি বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মৌসুমি বলেন, “রাজ্য সরকার অনেক কষ্ট করে ট্যাব কেনার জন্য টাকা দিচ্ছে। আর মোবাইল বিক্রেতারা সরকারি টাকায় ট্যাব না কেনার প্রস্তাব দিচ্ছে। এটা মানা যায় না।” কিন্তু পড়ুয়া এবং শিক্ষিকাদের মোবাইল নম্বর কী ভাবে ওই চক্রের হাতে গেল, তার সদুত্তর মেলেনি। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টির তদন্ত চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement