২০১৮ সালের ২৫ জুলাই মারা যান মাজিদ আনসারি।
নিজের ছেলের মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বিচারকের সামনে কেঁদে ফেললেন মাজিদ আনসারির বাবা মুস্তাকিন। বুধবার কোচবিহার দায়রা ও সেসন জজ সুকুমার রায়ের এজলাসে মাজিদ আনসারি হত্যাকাণ্ডের স্বাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিন ছিল। এ দিন মাজিদের বাবা মুস্তাকিন এবং তাঁর এক জ্যাঠতুতো দাদা সামসুল রহমান মোল্লাকে স্বাক্ষ্য দিতে ডাকা হয়। আদালতের সামনে ভিড় জমে যায়। প্রথমেই ডাক পড়ে মুস্তাকিনের। সরকারি আইনজীবী নকুল দেব তাঁকে মাজিদের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি কী জানেন, তা জিজ্ঞাসা করেন। মুস্তাকিন জানান, ওই দিন তিনি বাড়িতেই ছিলেন। তাঁর বড় ছেলে সাজিদ তাঁকে ফোন করে জানায় মাজিদকে গুলি করা হয়েছে। তিনি নার্সিংহোমে পৌঁছন। এর পর মাজিদকে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাজিদ। সেই কথা বলতে বলতেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন। পরে অবশ্য নিজেকে সামনে আইনজীবীদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
আদালত সূত্রেই জানা গিয়েছে, মুস্তাকিন জানান তাঁর ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের তিনি চেনেন। তাঁদের কয়েক জনের নামও উল্লেখ করেন তিনি। সামসুলও আদালতে দাঁড়িয়ে ওই ঘটনার কথা তিনি কিভাবে জানলেন, তা জানান। তিনি জানান, প্রথমে তিনি মুস্তাকিনের কাছে ওই ঘটনা জানতে পারেন। পরে নার্সিংহোমে গিয়ে সাজিদের কাছে পুরো ঘটনা জানতে পারেন। তিনিও অভিযুক্তদের নাম আদালতকে জানান।
এদিন একটি গুলির খোল আদালতে পেশ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ওই গুলির খোল পুলিশ ওইদিন বাজেয়াপ্ত করেছিল। সে সময় সামসুল সেখানে ছিলেন। তিনি সেই গুলি দেখেছেন বলেও জানান। তাঁকেও বিপক্ষের আইনজীবীরা একাধিক প্রশ্ন করেন। স্বাক্ষ্যগ্রহণ পর্বের সময়ে সেখানে হত্যাকাণ্ডে ধৃতদের আদালতে পেশ করা হয়।
গত বছরের ১৩ জুলাই কোচবিহার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাজিদ আনসারিকে রাস্তায় আটকে গুলি করে একদল যুবক। মাজিদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কলেজ ইউনিটের আহ্বায়ক ছিলেন। তাঁকে যারা খুন করেছে বলে অভিযোগ ওঠে তারাও টিএমসিপি কর্মী বলেই পরিচিত ছিল। ওই ঘটনায় পুলিশ জামিরুল হক, সূরজ হোসেন ওরফে স্পিড বয়, সায়ন হক ওরফে লোটাস, নবাব হেদায়াতুল্লা, সঞ্জিত সাহানি এবং অভিজিৎ বর্মণকে গ্রেফতার করে। ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তৃণমূল নেতা মুন্না খান’কেও। ওই তৃণমূল নেতা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। আগামী ২৫ জুলাই ফের শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।