করোনা-গুজব আটকাতে গ্রামে পুলিশ-প্রশাসন। তেহট্টে। নিজস্ব চিত্র
বেশ কয়েক দিন ধরে শুরু হয়েছিল বিষয়টা। সোশ্যাল মিডিয়ায় করোনাভাইরাস সম্পর্কে মিথ্যা ও আজগুবি সব তথ্য ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছিল। তার কোনওটায় বলা হচ্ছিল, পোল্ট্রির মুরগির মাংস বা ডিম খেলে করোনাভাইরাস হবে। কোনওটায় আবার হুঁশিয়ারি দিয়ে শিশুদের মুরগি থেকে দূরে রাখতে বলা হচ্ছিল। এমনকি গুজবকারীরা এমনও প্রচার করছিলেন যে, তেহট্টের চাঁদের ঘাট এলাকায় বেশ কিছু হাসপাতালে করোনাভাইরাস- আক্রান্ত হয়ে কয়েক জন ভর্তি হয়েছেন।
এই সব তথ্যে বিভ্রান্তি বাড়ছিল। অনেকেই আতঙ্কিত হচ্ছিলেন। দিশেহারা হচ্ছিলেন পোল্ট্রি মালিকেরাও। বৃহস্পতিবার মহকুমা ও পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে। গুজব ছড়ানোর জন্য তেহট্টের চাঁদের ঘাট থেকে নীলকান্ত বৈরাগ্য নামে এক যুবককে আটক করা হয়। মানুষকে গোটা বিষয় সম্পর্কে অবহিত করতে এবং গুজব আটকাতে শুক্রবার সকালে তেহট্ট হাসপাতলে মহকুমা প্রশাসন ও পুলিশ সাংবাদিক বৈঠক করে। চাঁদের ঘাট এলাকায় টোটোতে ব্যানার, লিফলেট-সহ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত প্রচার শুরু হয়। মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। গুজবে কান না-দেওয়ার পরামর্শ দেয় প্রশাসন। পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, গুজব দাবি করা হয়েছিল, কৃষ্ণনগরের এক চিকিৎসক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন। বলা হয়েছিল, পোল্ট্রির মুরগি থেকে রোগ ছড়াচ্ছে। এই গুজব ব্যাপক হারে শেয়ার হওয়া শুরু হয়। আতঙ্ক বাড়তে থাকে। চাঁদের ঘাট এলাকার অনেকে পুলিশকে জানান, তাঁরা এই ভাইরাস সম্পর্কে গুজব প্রথম নীলকান্ত বৈরাগ্য নামে এক যুবকের প্রোফাইলের দেখতে পান । তাঁকে পুলিশ আটক করে। যদিও নীলকান্তের পরিবারের সদস্যদের দাবি, নীলকান্তকে ওই গুজব কেউ পাঠিয়েছিলেন। তিনি নিজের থেকে এটি লেখেননি। ক্রমশ বেতাই পলাশিপাড়া, চাপড়া, আশ্রফপুর, ফতাইপুর, নাজিরপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় এই গুজব ছড়িয়েছিস। বিভ্রান্ত হয়েছিলেন মানুষ।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্ত জানান, গুজব ছড়ানো আটকাতে প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। তেহট্ট এসডিপিও শান্তনু সেন ও আইসি তাপস পাল বলেন, ‘‘চাঁদের ঘাট এলাকায় ব্যানার টাঙিয়ে ও টোটোতে করে সচেতনতা অভিযান শুরু হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়েও প্রশাসনের তরফ থেকে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।’’