বিধানসভা ভোটের আগে ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পে আর্থিক সুবিধা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃতীয় দফায় সরকার গঠনের এক মাসের মাথায়, বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ওই প্রকল্পে উপভোক্তারা এত দিন বছরে যে-ছ’হাজার টাকা পাচ্ছিলেন, তা বেড়ে হবে ১০ হাজার। কেন্দ্রের প্রকল্পে বছরে ছ’হাজার টাকা আর্থিক সুবিধা পান উপভোক্তা-কৃষক। ঘটনাচক্রে, বুধবারেই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন দেশের কৃষক আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাকেশ টিকায়েত।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের পিএম কিসান বনাম রাজ্যের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের তরজায় সরগরম হয়ে উঠেছিল প্রচার পর্ব। কেন্দ্রের অভিযোগ ছিল, তাদের প্রকল্প গ্রহণ না-করে কৃষকদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গ। সেই অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্য সরকারের দাবি ছিল, কৃষক বন্ধুই সেরা প্রকল্প। এ বার রাজ্য মন্ত্রিসভা পাশ করে দেওয়ায় এই প্রকল্পে উপভোক্তাদের আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পকে ছাপিয়ে গেল।
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় থাকা যে-সব উপভোক্তার জমির পরিমাণ এক একর বা তার বেশি, তাঁরা বছরে দু’বার পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা পাবেন। এক একরের কম জমির ক্ষেত্রে ন্যূনতম আর্থিক সহায়তার পরিমাণ দু’হাজার টাকা থেকে বেড়ে হবে চার হাজার। আগের মতোই এই প্রকল্পের আওতায় থাকা কৃষকের অকালমৃত্যুতে পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পিএম কিসানের আওতায় থাকা উপভোক্তাদের নামের তালিকা যাচাই করে কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই প্রকল্পের জন্য নোডাল ব্যাঙ্ক বাছাই এবং বাকি সব প্রশাসনিক কাজকর্মও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ধাক্কায় জলমগ্ন কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাওয়ায় বিকল্প উপায়ে বীজতলা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। স্থির হয়েছে, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ৯২০ একর উঁচু জমিতে সমবায় ভিত্তিতে নোনা জলে চাষ করার মতো কয়েকটি প্রজাতির ধানের বীজতলা তৈরি হবে। রাজ্য মন্ত্রিসভা এই খাতে এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে।
এ দিন ঠিকা টেন্যান্সি সংশোধিত আইনের আওতায় কিছু উপভোক্তাকে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।