বন্যা প্রতিরোধের বিভিন্ন প্রকল্প, কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য ১,১৬৩ কোটি টাকা প্রাপ্য। ফাইল চিত্র
বন্যা প্রতিরোধ প্রকল্পে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা অব্যাহত রেখে সম্প্রতি আটকে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা। সম্প্রতি কেন্দ্র একটি চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য সরকারকে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, কান্দি মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প খাতে ৪১ কোটি টাকা দেওয়া হবে না রাজ্যকে। পাশাপাশি আয়লা ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধ প্রকল্পের ৭০ কোটি টাকা এবং রেলব্রিজ তৈরির জন্য সেচ দফতরের খরচ হওয়া ৪২ কোটি টাকাও দেবে না তারা। মনমোহন সিংহ সরকারের আমলে ঠিক হয়েছিল, কেন্দ্র কান্দি মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ দেবে। কিন্তু ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর সেই বরাদ্দ কমিয়ে করা হয় ৫০ শতাংশ। কিন্তু সেই টাকাও না পেয়ে ক্ষুব্ধ সেচ দফতর।
গত বছরের অগস্ট মাসে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের নেতৃত্বে মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কদের এক প্রতিনিধিদল দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের কাছে রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন। আবার গত নভেম্বর মাসে সেচমন্ত্রী সৌমেন বিধানসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, বন্যা প্রতিরোধের বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন সুন্দরবনে আয়লা বাঁধ, কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাঘাই প্রকল্প ও কান্দি মাস্টারপ্ল্যানের খাতে কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য ১,১৬৩ কোটি টাকা দু'বছর ধরে পাওনা। তার উপর কেন্দ্রীয় সরকার থেকে এমন অসহযোগিতার চিঠি মেলায় ক্ষুব্ধ সেচ দফতর। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা খাতাকলমে দেখিয়েছিলাম কত কাজ বাকি, আর কী কী খাতে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিদলকে এ বিষয়ে আশ্বাস দেওয়ার পরেও এখন কেন্দ্র প্রাপ্য টাকা দিতে চাইছে না।’’
কেন্দ্র টাকা নিয়ে গড়িমসি করায় রাজ্য সরকারই নিজের কোষাগার থেকে খরচ করে কান্দি মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাইছে। যার জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৬৫০.৫৮ কোটি টাকা। এর ৫০ শতাংশ দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। শুধু মাত্র একটি অংশের কাজের ৮৩ কোটি টাকা মঞ্জুর করছে গড়িমসি করছে তারা। সূত্রের খবর, কান্দি মাস্টারপ্ল্যানের একটি অংশের কাজের জন্য রাজ্যকে প্রায় ৮৩ কোটি টাকা দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। এই টাকা দ্রুত মঞ্জুরের জন্য সম্প্রতি চিঠি দেওয়া হয় কেন্দ্রকে। সেই চিঠির উত্তরে কেন্দ্রীয় সরকার পাল্টা চিঠি দিয়ে রাজ্যকে জানায়, এখন রাজ্যের চাহিদা মতো অর্থ দেওয়া যাবে না। কেন্দ্র জানিয়েছে, ৮৩ কোটির মধ্যে মাত্র ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে পারবে তারা।