চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী। ফাইল ছবি
বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে ভোটের ফল বেরোনোর দিন ফোনে যাঁদেরই কথা হয়েছে, তাঁদেরই ডেকে পাঠাচ্ছে সিবিআই। তালিকায় থাকা রাজ্যের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীকেও এ বার সিবিআই ডেকে পাঠাল। বুধবার তিনি পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর এনআইটি-তে সিবিআই-এর অস্থায়ী শিবিরে এসেছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি ‘পুলকিত’ বলেও মন্তব্য করেন!
অভিজিতবাবু জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে আগামী ১৬ জুন ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি ফোন করে বুধবারই সিবিআই-এর সঙ্গে দেখা করার কথা বললে, তদন্তকারীরা তাতে সম্মত হন। সেই মতো, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ তিনি সিবিআই-এর শিবিরে আসেন।
সিবিআই সূত্রের দাবি, ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল অভিজিতবাবুকে। তবে স্পষ্ট করে ঠিক কী কারণে তাঁকে ডাকা হয়েছিল, তা বলেননি অভিজিৎ। দুপুর ১টা নাগাদ শিবির থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “খুনখারাপির মামলায় আমাকে ডাকা কেন, তা ভেবে আমি পুলকিত। এত খুনের মাঝখানে আমি কী ভূমিকায় থাকতে পারি, এটা ভেবে আমি চমকে গিয়েছি। ওঁরা যে সময় নিয়ে কথা বলছেন, ঘটনাচক্রে ওই সময়ে আমার ফোনে কোনও এক রাজনৈতিক নেতার ফোন এসেছিল।” অভিজিতবাবুর সংযোজন, “ওঁদের প্রশ্ন, ওই ফোনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে কি না? আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি, ডাক্তারের কাছে মুনি-ঋষিরাও আসেন। আবার ডাকাতও আসেন। রাজনৈতিক নেতারা তো আসেনই।”
সিবিআই-এর একটি সূত্রের মতে, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে যাঁদেরই ফোনে কথা হয়েছিল, তাঁদের সবার সঙ্গেই কথা বলছে সিবিআই। এ দিন অবশ্য অভিজিতবাবু নির্দিষ্ট করে কোনও রাজনৈতিক নেতার নাম করেননি। সব শেষে চিকিৎসকের মন্তব্য, “যেখানে মহামানবেরা ঘুরে বেড়ান, সেখানে আসতে পেরেছি। এটা আমি জীবনের অন্যতম প্রাপ্তি বলে মনে করছি।”
তদন্তকারীদের কথায়, বিধানসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার দিনে রাজনীতির বাইরে থাকা অনেকের সঙ্গেও বীরভূমের ছোট-বড় অনেক নেতার ফোনালাপের তথ্য উঠে এসেছে। সিবিআইয়ের দাবি, ফলাফল ঘোষণার পরে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য অনেকে ফোন করে থাকতে পারে। আবার কোনও অপরাধ সংঘটিত করার জন্যও ফোনালাপ হয়ে থাকতে পারে।
সিবিআই এ দিন জানিয়েছে, ভোটের ফলাফল ঘোষণার দিনই বীরভূমের ইলামবাজারে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনার তদন্তে উঠে আসা সূত্রের প্রেক্ষিতে ওই চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ওই ঘটনার তদন্তে একাধিক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বিভিন্ন লোকের ওই খুনের আগে ও পরে ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে কোন নেতার সঙ্গে কোন নেতা এবং অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কতক্ষণ ধরে কথা বলেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।