ফাইল চিত্র।
তিন, সাড়ে তিন বছর ধরে (২০১৮ সাল থেকে) কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়ে উড়ালপথ তৈরির পরিকল্পনা থমকে আছে। এত দিনে সেটির রূপায়ণে সক্রিয় উদ্যোগ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার এই বিষয়ে পুলিশ, পরিবহণ, পুর, পূর্ত, বিদ্যুৎ ও স্বরাষ্ট্র দফতর, রেল, হাওড়া জেলা প্রশাসন-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কী ভাবে ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা যায়, তার রূপরেখা ঠিক করতে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে এ দিনের বৈঠকে।
নবান্নের কাছে যেখানে বিদ্যাসাগর সেতুর শাখাগুলি শেষ হচ্ছে, ঠিক হয়েছে, তার কাছাকাছি এলাকা থেকে ছ’টি লেনের উড়ালপথ তৈরি করা হবে। সেটা যুক্ত হবে ছ’নম্বর জাতীয় সড়কে। প্রায় ৬.৮ কিলোমিটারের এই উড়ালপথটি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলেই তৈরি করবে রাজ্য।
তবে ওই পরিকল্পনা রূপায়ণে বিস্তর প্রস্তুতি লাগবে বলে প্রশাসনিক শিবিরের অভিমত। যেমন, বিদ্যুৎ ও জলের লাইন সরাতে হবে। তার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। মাঝখানে রেলপথ আছে। তাই সহযোগিতা লাগবে রেলেরও। কী ভাবে সেই সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়া যাবে, বৈঠকে উপস্থিত রেলকর্তাদের কাছ থেকে তা জেনে নিয়েছে নবান্ন। কাজ শুরু হলে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের দরকার হবে। কারণ, কোনা এক্সপ্রেস ধরে কলকাতার দিকে এবং কলকাতা থেকে বহু গাড়ি যাতায়াত করে। সদাব্যস্ত সেই রাস্তায় কী ভাবে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে, কোথায় কোথায় বিকল্প পথ ব্যবহার করা সম্ভব, সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করবে পুলিশ। সামগ্রিক কাজে সহযোগিতা করবে হাওড়া জেলা প্রশাসন।
ওই প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২১২৫ কোটি টাকা। এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “প্রকল্প রূপায়ণে অর্থ জোগানে সমস্যা হবে না। রাজ্য সরকার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। প্রকল্পের পরিকল্পনা প্রস্তুত হয়েই আছে। সমীক্ষাও শেষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকল্পটি অনুমোদন করেছেন।”
প্রশাসনিক সূত্রের ধারণা, মাস ছয়েকের মধ্যে কাজ শুরু করার লক্ষ্য নিয়েছেন রাজ্য সরকার এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করতে চায় রাজ্য। তাই প্রস্তুতি এবং সমন্বয়ের সব পর্যায়ের কাজকর্ম দ্রুত সেরে ফেলার জন্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, গাড়ির সংখ্যা যে-হারে বাড়ছে, সেই তুলনায় রাস্তার পরিসর বাড়ছে না। তাই উড়ালপথের ব্যবস্থা করা ছাড়া গতি নেই। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়ে জাতীয় সড়ক পর্যন্ত ওই উড়ালপথ পৌঁছে দেওয়া গেলে প্রবল যান-যন্ত্রণা থেকে সাধারণ মানুষকে অনেকটাই মুক্তি দেওয়া যাবে।