জেলায় জেলায় প্রাণিবাহিত রোগের উপর চলবে নজরদারি। প্রতীকী চিত্র।
অতিমারি থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্য প্রাণিবাহিত (জুনোটিক) রোগের উপর নজরদারি শুরু করছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলায় জেলায় প্রাণিবাহিত রোগের উপর চলবে নজরদারি। কোন জেলায়, কী ধরনের জুনোটিক রোগের বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে তার তালিকা করবে স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ দল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং প্রাণী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সংস্থা ওআইই একযোগে জানিয়েছে, নতুন সংক্রমণের ৭৫ শতাংশের উৎস হচ্ছে প্রাণী। অর্থাত্ অন্যান্য প্রাণী থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে মানুষের মধ্যে। সার্স ছাড়াও একাধিক রোগের বাহক বাদুড়। সার্স কোভ-টু বা কোভিডের উৎস নিয়ে বিতর্ক থাকলেও প্রাণিবাহিত রোগ নিয়ে সতর্ক কেন্দ্র স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। জুনোটিক রোগের নজরদারি চালাতে স্বাস্থ্যকর্তা, চিকিৎসক, পশু চিকিৎসক, বন্যপ্রাণী বিভাগের কর্তা-সহ ১৪ জনকে নিয়ে রাজ্য স্তরে গঠিত হয়েছে স্টেট জুনোসিস কমিটি। বিভিন্ন জেলায় জেলাশাসক-সহ ১১ জনকে নিয়ে রয়েছে জেলা জুনোসিস কমিটি। এই কমিটিতে রয়েছেন জেলার এপিডেমিয়োলজিস্টও।
বাড়ির পোষ্য বা গৃহপালিত পশু থেকে ছড়াতে পারে রোগ সংক্রমণ। ভাইরাস, ব্যকটেরিয়া, পরজীবীরা মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটালে তা কখনও সখনও মারাত্মক আকার নিতে পারে। গরু-সহ বিভিন্ন গবাদি পশুর মাধ্যমে মানব শরীরে হানা দেয় অ্যানথ্রাক্স, শুয়োর থেকে মশা-মাছিবাহিত জাপানি এনসেফ্যালাইটিস, পোকা থেকে স্ক্রাব টাইফাস। মরসুম বিশেষে একাধিক রোগ থাবা বসায় রাজ্যে। কিন্তু কোন মরসুমে কোন জেলায় জুনোটিক রোগ বাড়ছে তা দেখেই রাজ্যে রোগের মানচিত্র তৈরি হবে বলে জানান এক স্বাস্থ্যকর্তা। কোনও এলাকায় বিশেষ কোনও রোগ সংক্রমণ ছড়িয়ে পরছে কি না তার আগাম হদিশ পাওয়াকেই পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই কাজের জন্য প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজন। খুব তাড়াতাড়ি সেই কাজও শুরু করা হবে বলে জানান এক চিকিৎসক। রাজ্যের প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির চিকিৎসক ও অধ্যাপক সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের মতে, ‘‘মানুষ এবং প্রাণীদের স্বাস্থ্যের উপর একযোগে নজর দেওয়ার সময় এসেছে। এর জন্য সজাগ হতে হবে চিকিৎসকদের। প্রাণিবাহিত রোগের উপর নজর রাখলে মাহামারি থেকে স্থানীয় রোগ-সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব।’’