CV Ananda Bose

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ কবে? ঠিক হতে পারে বৃহস্পতিবার

শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে যে ভাবে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ হওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। এমনটাই মনে করছে বিধানসভার সচিবালয়ের একাংশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:০৮
Share:

(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। সেই আবহে শাসকদল বিধানসভায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। সেই প্রস্তাব কবে আনা হবে তা ঠিক হতে পারে আগামী বৃহস্পতিবার। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিধানসভার বাদল অধিবেশনের শেষ দিন। প্রশ্নোত্তর পর্ব ছাড়াও বৃহস্পতিবার ‘বাংলা দিবস’ নিয়ে আলোচনার জন্য সময় রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, নবান্ন থেকে নির্দেশ পেলেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার বিষয়ে তোড়জোড় শুরু করবে তৃণমূল পরিষদীয় দল। আর বৃহস্পতিবার সেই প্রস্তাব জমা দেওয়া হতে পারে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। ওই দিন ‘বাংলা দিবস’ নিয়ে আলোচনায় অংশ নিতে বিধানসভায় আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করা হচ্ছে তাঁর নির্দেশ পেলেই আগামী শুক্রবার বাদল অধিবেশনের আরও এক দিন বৃদ্ধি করা হতে পারে। সেই বিষয়ে প্রস্তুতিও রেখেছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। কিন্তু এখনও তাঁরা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানতে নারাজ। তবে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিলেই যাতে বিধানসভার ‘বিজনেস অ্যাডভাইজ়ারি কমিটি’ বৈঠকে বসে বিধানসভার এক দিনের সূচি তৈরি করতে পারেন, সেই বিষয়েও প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।

Advertisement

মঙ্গলবার আলিপুরের ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যেভাবে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাতে এই প্রস্তাব বিধানসভায় পেশ হওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছে বিধানসভার সচিবালয়ের একাংশ। তবে অন্য অংশের মতে আগামী মঙ্গলবার ইউরোপ সফরে রওনা হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই বৃহস্পতিবারের অধিবেশনের পর তিনি নিজের প্রস্তুতি সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। তা হলে এ বার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নাও আনা হতে পারে। ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি কলকাতায় ফিরলে আবারও এক দিনের বিশেষ অধিবেশন ডেকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বিধানসভার এক আধিকারিক এর কথায়, “এখনো পর্যন্ত আমরা বৃহস্পতিবার পর্যন্তই অধিবেশনের কাজকর্ম হবে ধরে নিয়ে এগোচ্ছি। কিন্তু শেষমেশ সরকার পক্ষ যদি কোন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চায় তাহলে স্পিকার সেই সুযোগ দিতেই পারেন।”

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের নাম না-করে তাঁর এই সাম্প্রতিক কালের উপাচার্য নিয়োগ এবং একাধিক নির্দেশনামা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যদি বোসের নির্দেশ মেনে চলে, তবে রাজ্য তাদের ক্ষেত্রে ‘আর্থিক অবরোধ’ করবে, তেমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবারেই আবারও মধ্যরাতে অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেন আচার্য আনন্দ বোস। মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজভবনের পক্ষে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য হিসাবে অধ্যাপক কাজল দে-কে নিয়োগ করছেন। রাজ্যপাল নিয়োগনামায় সই করছেন, তেমন একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। আর এই সংঘাতের আবহে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টোয় বিকাশভবনে ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রেজিস্ট্রারদের সঙ্গে ব্রাত্য আলোচনা করবেন বলে খবর। এমন জটিল পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনা শাসকদলের পক্ষেও অনিবার্য হয়ে পড়েছে বলেই মত বাংলার রাজনীতির কারবারীরা। তবে তা কবে আনা হবে, তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা চলছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement