ফাইল চিত্র।
কেন্দ্র দীর্ঘদিন আগে পরিকল্পনা করলেও পশ্চিমবঙ্গ এত দিন ‘এক দেশ, এক রেশন’ ব্যবস্থার প্রস্তাবে সায় দিচ্ছিল না। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নবান্নে জানান, এই রাজ্যও রেশনের ক্ষেত্রে এই পরিকল্পনা বলবৎ করবে। এ দিন জেলা প্রশাসনগুলিকে ভুয়ো বাদ দিয়ে বৈধ রেশন কার্ডের তথ্যভান্ডার তৈরি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বার্থেই ‘এক দেশ, এক রেশন’ কর্মসূচি চালু করতে হবে বলে সর্বোচ্চ আদালত সাম্প্রতিক নির্দেশে জানিয়ে দিয়েছে। “আমাদের খাদ্যসাথী প্রকল্পে ১০ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ রেশন পাচ্ছেন। ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশনে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। এর কাজ চলছে। তবে আমাদের কিছু আধার কার্ড বাকি আছে। সেটা করে ফেলতে হবে। আমরা তিন মাসের মধ্যে করে দেব,’’ এ দিন নবান্নে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্য প্রশাসনের অন্দরের বক্তব্য, গত বছরেই আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ড যুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। বিজ্ঞাপন দিয়ে সেই কাজ করে ফেলতে বলা হয়েছে প্রত্যেক উপভোক্তাকে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেশন তোলার পরে এসএমএসে তার প্রাপ্তি-বার্তা পাঠানোর পদ্ধতিও চালু হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত উপভোক্তাদের ফোন নম্বর না-মেলায় মাঝখানে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
এ দিন জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, সাত দিনের মধ্যে সব মৃত উপভোক্তার রেশন কার্ডের নম্বর, মৃত্যুর শংসাপত্র জোগাড় করে পূর্ণাঙ্গ তথ্যভান্ডার তৈরি করতে হবে। যে-সব রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগ বাকি রয়েছে, সেগুলির কাজ শেষ করতে হবে দ্রুত। যাঁদের কাছে পরিচয়পত্র হিসেবে রেশন কার্ড রয়েছে, অথচ তা
দিয়ে রেশন-সামগ্রী তোলা যায় না, তেমন ব্যক্তিদের তথ্যভান্ডারও তৈরি হবে। রেশন ব্যবস্থায় নজর রাখতে তৈরি ভিজিল্যান্স দলকে আরও সক্রিয় করা হচ্ছে। সরকারের নির্দেশ, খাদ্যশস্য সংগ্রহে আরও বেশি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে যুক্ত করার পাশাপাশি গোটা প্রক্রিয়ার অডিট করতে হবে। কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা-কর্তাদের দরকারে স্থানীয় স্তরে (যেখানে করোনা রোগী বেশি) বিধিনিষেধ আরোপ করতে বলা হয়েছে।
এ দিন বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই, সবাই যেন ঠিকমতো রেশন পায়। দুয়ারে রেশন চালু করতে আমাদের কিছু সময় লাগবে। যে-সব কৃষকের এক একরের বেশি জমি আছে, তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রকল্প ১৬ জুন চালু হবে। যাঁদের অল্প জমি, তাঁরাও চার হাজার টাকা পাবেন। আস্তে আস্তে লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, দুয়ারে রেশনও চালু হবে।”