বিধানসভায় সিএএ বিরোধী নিন্দা প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। ফাইল চিত্র।
আগামী ১৮ নভেম্বর শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন। এই অধিবেশনেই রাজ্য সরকার আনতে পারে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বিরোধী নিন্দা প্রস্তাব। সূত্রের খবর, আগামী ডিসেম্বর মাসেই দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় সরকার কার্যকরী করতে পারে নাগরিক সংশোধনী আইন। এমন খবর জানার পরেই বিধানসভায় সিএএ বিরোধী নিন্দা প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। রাজ্য বিধানসভায় এই প্রস্তাব আনা হলে উত্তাল হতে পারে অধিবেশন, এমনটাই মনে করছেন বাংলার রাজনীতির কারবারিরা। কারণ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই সিএএ কার্যকর করার পক্ষপাতী। আর কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বিধানসভার অন্দরে এই ইস্যুতেই সংঘাত হতে পারে তৃণমূল পরিষদীয় দলের সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের।
সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যে সিএএ চালু করার বিষয়ে জোর সওয়াল করেছেন। তাই মনে করা হচ্ছে যে দিন বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব আনা হবে সে দিন তার ওপর বক্তৃতা করবেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা। আর তিনি বিধানসভায় বক্তৃতা করলেই শাসকদলের বিধায়কদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। তাই আগামী শীতকালীন অধিবেশনের উত্তাপ যে কয়েক গুণ বাড়বে এই নিন্দা প্রস্তাবকে ঘিরে, তা একবাক্যেই মেনে নিচ্ছেন পরিষদীয় রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা। তা ছাড়া বিজেপির মতুয়া সম্প্রদায়ে বিধায়করাও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিএএ কার্যকরী করার পক্ষপাতী। কারণ গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি, মতুয়া অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে ভাল ফল করেছে। তাই বিজেপির পক্ষে সিএএ নিয়ে নিন্দা প্রস্তাবের বিরোধিতা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার শীতকালীন অধিবেশনে যে, এই সংক্রান্ত প্রস্তাব আনতে পারে সে ব্যাপারে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যে। মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন এই অধিবেশনে বেশ কিছু বিলের সঙ্গে প্রস্তাব আনার কথাও ভাবছে রাজ্য সরকার।
তাই রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আগামী ডিসেম্বর মাসে সিএএ চালু করার আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে ধাক্কা দিয়ে রাজ্য বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব পাশ করাতে চান মমতা। তবে বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, বিধানসভায় এই ধরনের প্রস্তাবনা হলে তার পাল্টা বিরোধিতা করার সব রকম প্রয়াস নেবেন তাঁরা। এর আগে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এনআরসি ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ও ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের বিরুদ্ধেও নিন্দা প্রস্তাব এনেছে রাজ্য সরকার। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে সেই সব প্রস্তাব পাশও হয়েছে।