ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের তলব মতো সোমবার, ৩১ মে, সকাল ১০টায় নয়া দিল্লির নর্থ ব্লকে কর্মিবর্গ মন্ত্রকে হাজিরা দেওয়ার কথা তাঁর। তার আগের দিন রবিবার বিকেলে নবান্নে গেলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছু ক্ষণ নিজের ঘরেই কাটালেন তিনি।
নবান্ন সূত্রের খবর, মুখ্যসচিবকে ছাড়া হবে না জানিয়ে দিল্লিতে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। শুক্রবার রাতে মুখ্যসচিবের বদলির নির্দেশ আসে। শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেন, বদলির নির্দেশ প্রত্যাহার করা হোক। তবে অনুরোধ না মানলে আইনি লড়াইয়ের পথও যে ভাবনায় রয়েছে তা-ও জানিয়ে দেন মমতা।
রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নির্দেশনামা প্রত্যাহারের কোনও খবর নেই। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে অতিমারির মধ্যে এবং ইয়াস পরবর্তী অবস্থায় আলাপনকে ছাড়া সম্ভব নয়। সোমবার বিকেলে ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর সেখানে বেশ কয়েকটি দফতরের সচিবকে ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে আলাপনও থাকতে পারেন বলে নবান্নের একটা সূত্রের খবর।
নিয়মানুযায়ী, রাজ্য সরকার যদি কোনও সচিব স্তরের আধিকারিককে ছাড়তে না চায়, তবে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানানোই রেওয়াজ। সচিব পর্যায়ের আধিকারিকদের নিয়োগের বিষয়টি যে কেন্দ্রীয় সরকারি বিভাগ দেখভাল করে তার নাম ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিং বা ডিপিওটি। রাজ্য সরকারের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি দেখার দায়িত্বে রয়েছে প্রশাসনিক কর্মিবর্গ দফতর। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের এই প্রশাসনিক কর্মিবর্গ বিভাগের পক্ষ থেকেই চিঠি দিয়ে ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিং-কে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। ঠিক কী কারণে মুখ্যসচিবকে ছাড়া হবে না, তাও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা থাকছে বলেও জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, কোনও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সচিব পর্যায়ের আধিকারিককে তাঁদের কাজে যোগদানের নির্দেশ দিলে, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকেও চিঠি দিয়ে তা জানানোই রেওয়াজ। এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় সরকার আলাপনকে দিল্লিতে তলব করার পাশাপাশি, চিঠি পাঠানো হয়েছিল নবান্নেও। তাই পাল্টা চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারও কেন্দ্রকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেবে যে, মুখ্যসচিবকে কেন ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, সোমবার ৩১ মে তাঁর কর্মজীবনের শেষদিন। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে মুখ্যসচিবের মেয়াদবৃদ্ধির আবেদন জানালে, তাতে সায় মেলে। মুখ্যসচিব হিসেবে ৩ মাসের মেয়াদ বাড়ে আলাপনের। শুক্রবার কলাইকুন্ডা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা বৈঠকে হাজির থাকার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও মুখ্যসচিব আলাপনের। কিন্তু মোদীর সঙ্গে দেখা করলেও দু’জনের কেউই বৈঠকে যোগ দেননি। তার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই আলাপনকে দিল্লিতে তলব করে কেন্দ্র।