প্রতীকী ছবি।
অতিমারিতে পরিবহণ ক্ষেত্রের আর্থিক বিপর্যয়ে কিছুটা সুরাহা দিতে বুধবার রাজ্য বাজেটে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পথকর এবং অতিরিক্ত কর মকুবের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সামগ্রিক ভাবে সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশের মতে, এই সিদ্ধান্তে খুব সামান্যই সুরাহা হবে। কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত অনুমোদনের পরেও সেই নির্দেশ বিভিন্ন আঞ্চলিক দফতরে পৌঁছতে অনেক দেরি হয় বলে অভিযোগ বেসরকারি বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব সংগঠনের। অভিযোগ, শেষ পর্যন্ত বাস্তবে সেই ছাড়ের সুবিধা খুব অল্প সংখ্যক গাড়ির মালিকই নিতে পারেন।
অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জুন পর্যন্ত যে-ছাড় ছিল, তার সুবিধাই এখনও অনেকে নিতে পারেননি। এককালীন ছাড়ের ব্যবস্থা হলে খানিকটা সুরাহা হত।’’ তিনি জানান, কর ছাড়ের সঙ্গে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও জরুরি। নইলে বেসরকারি পরিবহণের সমস্যা মিটবে না। বাসমালিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, এক বছরের কর ছাড়ে বড়জোর ১২-১৪ হাজার টাকা সুরাহা হতে পারে। কিন্তু বছরের বেশির ভাগ সময় তো গাড়িই চালানো যায়নি। ফলে ক্ষতির পরিমাণ বহু গুণ। ব্যাঙ্কের বকেয়া, বিমা রক্ষণাবেক্ষণ, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, টোল প্লাজ়ায় খরচ বৃদ্ধি— সব মিলিয়ে আর্থিক দায়ভার কয়েক লক্ষ টাকার। সেই তুলনায় সরকারের দেওয়া ছাড়ের পরিমাণ নগণ্য।
মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি অনুদানের চেয়ে বেসরকারি পরিবহণের স্বনির্ভরতা ফেরানো জরুরি। সেটাই টিকে থাকার উপায়। কর ছাড়ে সুরাহা সামান্যই।’’ সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের টিটু সাহা জানান, কর ছাড়ের সুবিধা পেতে আগের সব বকেয়া মিটিয়ে দিতে হয়। ফলে আদতে সেই সুবিধা পাওয়া জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাব সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘কয়েক হাজার টাকার ছাড়ের জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবু এই ঘোষণাকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাবের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে দ্রুত বিবেচনা করা প্রয়োজন। নইলে যাত্রী বা পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত মানুষ— কারও সমস্যাই কমবে না।’’