রাজ্যের তরফে নতুন কোনও দিন ঘোষণার বার্তা কমিশন পায়নি বলেই খবর। প্রতীকী ছবি।
একদা শীতকালে পঞ্চায়েত ভোট করানোর পক্ষে ছিল রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। তার পরে শোনা গিয়েছিল, মে মাসে ভোট হবে। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। সূত্রের খবর, মে মাসের একটি দিনও ঠিক হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্ঘণ্ট কার্যত বাতিলের পথে। এই পরিস্থিতিতে ভোট কবে হবে, তা নিয়ে শনিবার রাত পর্যন্ত কার্যত অন্ধকারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কারণ, রাজ্য সরকার এবং কমিশন আলোচনা করে দিন ঠিক করে। সেই মোতাবেক বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। আপাতত রাজ্যের তরফে নতুন কোনও দিন ঘোষণার বার্তা কমিশন পায়নি বলেই খবর।
সূত্রের খবর, মে মাসের শেষ সপ্তাহের একটি দিন স্থির করা হয়েছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে অন্তত এক মাস আগে, অর্থাৎ এপ্রিলের শেষে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হত। তা হয়নি। তা ছাড়া, এ মাসেই বর্তমান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই তিনি ভোটের ঘোষণা করবেন না বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। ভোট প্রসঙ্গে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “সরকারি ভাবে চূড়ান্ত কিছু হয়নি।”
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানান, এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ‘দুয়ারে সরকার’-এর মেয়াদ বাড়িয়েছিল রাজ্য সরকার। তার পরেই ১৯ এপ্রিল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’মাস ব্যাপী ‘জনসংযোগ যাত্রা’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন। এ দিকে ১৮ এপ্রিল সব জেলাশাসকের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের বৈঠকের কথা ছিল।
ঘটনাচক্রে তা বাতিল হয়ে যায়। সব মিলিয়েই বোঝা গিয়েছিল যে, এপ্রিলের শেষে ভোট ঘোষণা হবে না।
ভোট কবে হবে তা নিয়ে জল্পনা আছে। প্রশাসন সূত্রের দাবি, বর্ষায় ভোট হতে বাধা নেই। কমিশনও প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। তবে পঞ্চায়েতমন্ত্রীর কথায়, “পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ শেষ হতে দেরি আছে। এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি। আরও অনেক রকম আইনি প্রথাও রয়েছে। ভোট পিছোনো যায়, প্রশাসক বসানো যায়। তবে সরকারি স্তরে কোনও কিছু নিয়েই সিদ্ধান্ত হয়নি।’’
এই পরিস্থিতিতে, ভোট কবে হবে তার ইঙ্গিতের অপেক্ষায় আছেন প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা। তাঁরা বলছেন, দু’টি পর্যায়ে ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ হয়। সাধারণত বিজ্ঞপ্তির কয়েক দিন আগে ভোটকর্মীদের প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তির পরে হয় দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ। প্রথম প্রশিক্ষণ শুরু হলে সহজেই অনুমান করা যাবে, ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে চলেছে। তা ছাড়া, সাধারণত, ভোটের ন্যূনতম ১২ দিন আগে ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ পায়। সেই ঘটনা ঘটলেও বলা সম্ভব, ভোট এগিয়ে আসছে। কিন্তু তালিকা প্রকাশ কবে হবে, তা-ও নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তারা। তবে রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “নিরাপত্তা রূপরেখা তৈরি করতে হবে। রাজ্যের পুলিশকর্মীদের সংখ্যা চূড়ান্ত করতে হবে। ঘাটতি হলে দরকারে অন্য রাজ্য থেকে সশস্ত্র পুলিশকর্মী আনতে হবে। এগুলি চটজলদি করা সম্ভব নয়।”