Suvendu Adhikari

কেন্দ্রের টাকা ভিন্ খাতে খরচের অভিযোগ শুভেন্দুর, খারিজ রাজ্যের

এক খাতে পাওয়া টাকা অন্য খাতে খরচের অভিযোগ শুভেন্দু আগেও তুলেছেন, এ বার তাতে নতুন উদাহরণ সংযুক্ত হল। এমন অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের অর্থ দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৫:৫৮
Share:

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।

পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া অনুদানের টাকা রাজ্য সরকার অন্য খাতে কাজে লাগাচ্ছে বলে আবার অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শু‌ভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের কাছে নির্দিষ্ট কারণে ঋণ হিসেবে পাওয়া টাকা রাজ্য তাদের রাজস্ব ব্যয় খাতে দেখিয়ে লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্প চালাতে খরচ করছে। যা ‘বেআইনি ও অনৈতিক’। এক খাতে পাওয়া টাকা অন্য খাতে খরচের অভিযোগ শুভেন্দু আগেও তুলেছেন, এ বার তাতে নতুন উদাহরণ সংযুক্ত হল। এমন অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের অর্থ দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

Advertisement

কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের রাজকোষ পরিচালনা সংক্রান্ত বিভাগের এক সহকারী অধিকর্তা রাজ্যের অর্থ দফতরের সচিবকে সম্প্রতি যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তার প্রতিলিপি দিয়ে টুইটারে সরব হয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, বিশেষ সহায়তা হিসেবে কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্য যে ৬ হাজার কোটি ২১ লক্ষ টাকা পেয়েছে, তার মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা সমাজ কল্যাণ দফতরের তহবিলে দিয়েছে রাজ্য। লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্পের উপভোক্তাদের ওই তহবিল থেকে টাকা দেওয়া হচ্ছে। অথচ কেন্দ্রের চিঠিতে বলা আছে, আর্থিক সহায়তার জন্য যে নির্দেশিকা পাঠানো আছে, সেই অনুযায়ীই পরবর্তী পর্বের টাকার জন্য প্রস্তাব পাঠাতে হবে। শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘রাজ্যের অর্থ দফতরের ঔদ্ধত্য এবং বেআইনি কাজ এই ঘটনায় পরিষ্কার। তারা অর্থনীতির কোনও নিয়মই মানছে না। পিসি এবং ভাইপোর মর্জিমাফিক পশ্চিমবঙ্গকে একটা কোম্পানির মতো করে চালানো হচ্ছে!’’ কেন্দ্রের ঋণের টাকা অন্য ভাবে ব্যবহারের অভিযোগ সামনে রেখে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের জবাব দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা।

রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের এই বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে অর্থ দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা শুভেন্দুকে পাল্টা আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘যত কম কথা বলবেন, তত ওঁর অজ্ঞানতা কম ধরা পড়বে! মন্ত্রীর কাছে যাওয়ার মুরোদ নেই, সচিবকে তাই চিঠি লিখতে হয়েছে! অর্থহীন কথাবার্তা! এক খাতের টাকা অন্য খাতে এ ভাবে দেওয়া যায় না কি? উনি হয়তো এ সব ভাল জানেন! কারণ, অনেক দিন তো নানা জায়গায় ছিলেন!”

Advertisement

এরই পাশাপাশি লিজ়ের জমি বিক্রি করার যে সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নিয়েছে, তা নিয়েও শুক্রবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার খরচ চালানোর জন্য অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করার পরে এ বার জমিতে হাত দিচ্ছে। এতে নির্দিষ্ট কিছু সংস্থার ফায়দা হবে এবং ভবিষ্যতে আরও একটা কেলেঙ্কারি দেখা যাবে। তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এমন পদক্ষেপ থেকে রাজ্যকে বিরত করার আর্জি রাজ্যপালকে জানিয়েছেন শুভেন্দু। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএমও। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘জমি আন্দোলনকে সামনে রেখে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। তাদেরই সরকার ক্ষমতায় আসার এক দশকের মধ্যে জমি মাফিয়াদের হাতে সরকারি জমির মালিকানা তুলে দিতে চাইছে! জমি বিক্রি করেই এখন সরকার চালাতে হচ্ছে। কেন্দ্রের সরকার সংস্থা বেচে দিচ্ছে, আর রাজ্যের সরকার জমি বেচছে!’’

রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বিরোধী দলনেতাকে পাল্টা বিঁধেছেন, ‘‘শুভেন্দু বিজেপি নেতাদের জিজ্ঞেস করুন, কেন্দ্র কেন সরকারি প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য সময়ে দিচ্ছে না। না হলে এই সব চিঠি অপ্রকাশিত পত্রাবলির মতো রেখে দিন! ভবিষ্যতে বই ছাপবেন। মানুষের টাকা মানুষের জন্য খরচ হচ্ছে। আপত্তি থাকলে স্পষ্ট বলুন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement