রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল, আদালত এবং কেন্দ্রীয় সংস্থার হস্তক্ষেপ নিয়ে সর্বভারতীয় স্পিকার সম্মলনে সরব হলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ওই সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘এই হস্তক্ষেপ গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।’’ এ ব্যাপারে তিনি সবিস্তার আলোচনার প্রয়োজনও উল্লেখ করেছেন।
রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য বিধানসভার স্পিকারের মতবিরোধ একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। নারদ মামলা নিয়ে সম্প্রতি আদালত এবং কেন্দ্রীয় দুই তদন্ত সংস্থার কাজকর্ম নিয়েও মতপার্থক্য হয়েছে। এ দিন লোকসভার স্পিকার-সহ অন্য রাজ্যের স্পিকারদের ভার্চুয়াল সম্মেলনে পরিষদীয় ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের এই অভিযোগ তোলেন বিমান। পরে বলেন, ‘‘এই সব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কাজ, দায়িত্ব ও মর্যাদা আলাদা করে চিহ্নিত রয়েছে। প্রত্যেকের পরস্পরের সেই সীমা সম্পর্কে সতর্ক থেকেই পদক্ষেপ করা উচিত। এ ব্যাপারে সর্বভারতীয় স্তরে স্পিকারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ স্পিকারদের পরবর্তী সম্মেলন হিমাচল প্রদেশে হওয়ার কথা। সেখানে আলোচ্য হিসেবে এই বিষয়টিই চান তিনি।
রাজ্যপালের সঙ্গে স্পিকারের মতবিরোধ নতুন নয়। সম্প্রতি নারদ মামলায় অভিযুক্ত তিন জনপ্রতিনিধি সম্পর্কে আদালত ও কেন্দ্রীয় সংস্থা কাজে আপত্তি তুলেছিলেন বিমান। ওই তিন জনপ্রতিনিধির নামে আদালতের বিরুদ্ধে আদালতের সমন পাঠাতে অস্বীকার করেছেন তিনি। সেই সমন আদালতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই ও ইডি ওই একই মামলায় চার্জশিটের প্রক্রিয়ায় আপত্তি জানিয়ে তাদের দুই কর্তাকে তলবও করেছেন। তার পরই এ দিনই স্পিকারদের বৈঠকে সরব হন বিমান।
স্পিকার সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই ফের বিধানসভা ও রাজভবনের দূরত্বের পুরনো প্রসঙ্গ সামনে এনেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। স্পিকারকে লেখা চিঠিতে পুরনো কয়েকটি ঘটনা উল্লেখের পাশাপাশি স্পিকারের এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছে তিনি। স্পিকারের আচরণ নিয়ে খোঁচা দিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্য, ‘‘জনসমক্ষে এইরকম অপ্রত্যাশিত আচরণ সংসদীয় গণতন্ত্র ও সংশ্লিষ্ট অফিসের মান ক্ষুণ্ণ করে।’’ এই প্রসঙ্গে স্পিকারের উদ্দেশে ‘আত্মানুসন্ধানে’র পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বিপন্ন। কারণ তৃণমূল সরকার গত ১০ বছরে তৃণমূল সরকার থেকে গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার হতে পারেনি। একই ভাবে তৃণমূলের সদস্য বিমানবাবুরও স্পিকারের পদে উত্তরণ হয়নি। তৃণমূল নেতারা বিভিন্ন সময়ে রাজ্যপালকে হাস্যাস্পদ করার চেষ্টা করেছেন। তারই প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে বিমানবাবুর বক্তব্যে।’’