—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্য বাজেটে জমি, ফ্ল্যাট, বাড়ি ইত্যাদি কেনাবেচায় রেজিস্ট্রেশনের স্ট্যাম্প ডিউটির পরিমাণ কিছুটা কমানোর প্রস্তাব করেছিল রাজ্য সরকার। সেই ঘোষণার পর থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে। ফলে আর্থিক কারণে স্থগিত থাকা রেজিস্ট্রেশনগুলির আবেদনও জমা করতে চান অনেকে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে সংশ্লিষ্ট সার্ভার কাজ না-করার কারণে আবেদন জমা করতে অসুবিধায় পড়েছেন বহু মানুষ। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, যে সিদ্ধান্ত ঘোষিত, তার পরেও কেন হয়রানি পোহাতে হবে সাধারণ মানুষকে? রাজ্য সরকারের আশ্বাস, আগামী সপ্তাহ থেকেই সমস্যার সমাধান হবে।
সম্প্রতি বাজেটে জমি, ফ্ল্যাট, বাড়ি ইত্যাদি কেনাবেচায় বা লিজ়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের স্ট্যাম্প ডিউটি ২ শতাংশ এবং সার্কল রেট ১০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছে রাজ্য সরকার। শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় স্ট্যাম্প ডিউটি ছিল যথাক্রমে ৬ এবং ৫ শতাংশ। দীর্ঘ করোনা-কালে আর্থিক অবস্থায় অনেকটাই অবনতি হয়েছে। সামগ্রিক ভাবে ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনাবেচার বাজারে বিপুল মন্দা দেখা দিয়েছে। রাজ্য সরকার মনে করছে, এই অবস্থায় স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় দিলে এক দিকে যেমন ক্রেতা-বিক্রেতারা উপকৃত হবেন, তেমনই বকেয়া থাকা বহু রেজিস্ট্রেশন এই সুযোগে হওয়ায় রাজ্যের কোষাগারেও আয় বাড়বে।
প্রশাসনের অন্দরের খবর, এত দিনের চালু পদ্ধতি সংস্কার করতেই এই সমস্যা হচ্ছে। কারণ, অনলাইন পদ্ধতিতে এতদিন সর্ব স্তরে পুরনো দরই নির্দিষ্ট করা ছিল। এ বার সেই সবক’টি স্তরে দর সংশোধন করতে হবে। সেই কারণে কিছুদিন সমস্যায় পড়তে হয়েছে মানুষকে। কিন্তু সংশোধনের পরে একবারে পোর্টাল উন্মুক্ত করতে পারত দফতর। সেক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হতে হত না মানুষকে। সরকারের বক্তব্য, বাজেট পাশ হওয়ার পরে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করলে এই সুবিধা মিলবে। এক কর্তার কথায়, “কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। আশা করা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহ থেকেই পোর্টাল পুরোদমে চালু হয়ে যাবে। মানুষ আবেদনপত্র প্রস্তুত রাখুন, পোর্টাল চালু হলে কাজ হতে দেরি হবে না।”
অর্থ দফতরের কর্তাদের দাবি, স্ট্যাম্প ডিউটি হ্রাস করার কারণে সরকারের আনুমানিক ১৫০ কোটি টাকা লোকসান হতে পারে। কিন্তু দর কমার কারণে বেশি সংখ্যায় রেজিস্ট্রেশন হবে। সে ক্ষেত্রে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আয় হতে পারে সরকারের। এক কর্তার বক্তব্য, “অন্যান্য রাজ্যে এই পদ্ধতিতে সুবিধা হয়েছে। ফলে যত বেশি রেজিস্ট্রেশন হবে, তত আয়ও বাড়বে। তা ছাড়া এই সুবিধায় বাজার কিছুটা চাঙ্গা হলেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে সামগ্রিক অর্থনীতির উপর। তাই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।