ফাইল চিত্র।
কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে এসএসকেএম বা পিজি-তে শিল্পমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য গড়া মেডিক্যাল বোর্ডে থাকা চিকিৎসকদের। কিন্তু পিজি-র চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শনিবার যে-অবস্থায় শিল্পমন্ত্রীকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তাতে তাঁকে ভর্তি করার প্রয়োজন ছিল। ওই চিকিৎসকদের আরও দাবি, রাজ্যের এই হাসপাতালে মন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষার যে-রিপোর্ট এসেছে, তার থেকে আলাদা কিছু আসেনি ভুবনেশ্বর এমসে। এমনকি সেখানে বদলানো হয়নি ওষুধও। কয়েকটির ক্ষেত্রে মাত্রা পরিবর্তন করা হয়েছে মাত্র।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি গ্রেফতার করার পরে পরেই পিজি-তে ভর্তি করানো হয়েছিল পার্থবাবুকে। তবে তাঁকে হাসপাতালে রাখার প্রয়োজন নেই বলে ভুবনেশ্বরের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস) পরে জানিয়ে দেয়। তার পর থেকেই অভিযোগের তিরে বিদ্ধ পশ্চিমবঙ্গের সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পিজি।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী পার্থবাবুর সঙ্গে ভুবনেশ্বর যাওয়া পিজি-র কার্ডিয়োলজি বিভাগের চিকিৎসক তুষারকান্তি পাত্র বলেন, “আমাদের রিপোর্টের সঙ্গে এমসের রিপোর্ট মিলে গিয়েছে। সব ওষুধও প্রায় একই রাখা হয়েছে। শুধু ভর্তির পরামর্শ দেননি ওঁরা।” রিপোর্ট এক হলেও ভর্তির করার ক্ষেত্রে অভিমত আলাদা হল কেন? তুষারবাবু জানান, শনিবার ভর্তির পর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ৩৬ ঘণ্টার চিকিৎসায় পার্থবাবুর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। সেই অবস্থায় পরীক্ষা করে এমসের চিকিৎসকেরা যে-রিপোর্ট পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে মতামত দিয়েছেন।
এসএসকেএমের চিকিৎসকদের বড় অংশের মতে, শনিবার পার্থবাবু যে-সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন, তা যদি অন্য কোনও সাধারণ রোগীর ক্ষেত্রে থাকত, তা হলে তাঁকেও ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হত। কারণ, এই ধরনের সমস্যায় ভর্তি করে বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখা নেওয়া হয়, রোগীর শরীরে ঝুঁকিপূর্ণ কোনও সমস্যা রয়েছে কি না। জরুরি বিভাগে আসা এমন রোগীর প্রেসক্রিপশনে ‘অ্যাডমিশন অ্যাডভাইস’ লেখা হত। শয্যা না-থাকলে অন্যত্র যেতে বলা হত। কিংবা পরের দিন আউটডোরে আসতে পরামর্শ দেওয়া হত। কিন্তু ভর্তির পরামর্শের সিদ্ধান্তের বদল হত না।
স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, পিজি-তে পৌঁছে পার্থবাবু যে-সব সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন, সেগুলি তিনি এমসেও জানান। এসএসকেএমে রক্ত ও হৃদ্যন্ত্রের যে-পরীক্ষা করা হয়েছিল, সেগুলি এমসেও করা হয়েছে। তার পরে ক্রনিক পুরনো রোগের জন্য যে-চোদ্দোটি ওষুধের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ছিল এসএসকেএমের প্রেসক্রিপশনেও। শহরের এই হাসপাতালের এক বরিষ্ঠ চিকিৎসক বলেন, “আমাদের রিপোর্ট যে ঠিক, তা পুনরায় পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া গেল। এটা আমাদের জন্যই ভাল হল।” ওই রিপোর্টগুলিই ইডি-র কাছে জমা দিয়েছিল পিজি।