—ফাইল চিত্র।
রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসার জন্য ‘এপেক্স হাব’ বা উৎকর্ষ চিকিৎসা কেন্দ্র করা হল এসএসকেএম হাসপাতালকে। পাশাপাশি কেন্দ্রের সুপারিশে ছত্রাকঘটিত ওই রোগকে ‘নোটিফায়েবল-ডিজ়িজ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
এ দিকে দু’দিন আঠারো হাজারের ঘরে থাকার পরে সোমবার কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা নামল ১৭ হাজার ৮৮৩ জন। তবে রবিবার থেকে এ দিন করোনা পরীক্ষা কিছুটা কম হয়েছে। সোমবার পরীক্ষা হয়েছে ৬৬ হাজার ২৮৮ জনের। রবিবার সংখ্যাটি ছিল ৬৯ হাজার ১৪৫ জন। সোমবার করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৩ জনের।
তবে এখন আক্রান্তের সংখ্যা দেখে উচ্ছ্বসিত হতে বারণ করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলছেন, ‘‘দ্বিতীয় ঢেউয়ে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য হারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। তাই কড়া নিয়ন্ত্রণ বিধি-র শেষে পরিস্থিতি বিচার করে কোনও সিদ্ধান্তে আসা উচিত। ওই নিয়ন্ত্রণ বিধি উঠে যাওয়ার পর মানুষ কতটা কোভিড বিধি পালন করছেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।’’
মিউকরমাইকোসিস নিয়েও চিন্তা বাড়ছে সরকারের। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের সই করা নির্দেশিকাতে জানানো হয়েছে, মিউকরমাইকোসিসে কেউ আক্রান্ত হলে, নিশ্চিত বা সন্দেহজনক যাই হোক না কেন, সেই রোগীর তথ্য জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জানাতে হবে। অর্থাৎ ছত্রাকঘটিত ওই রোগে আক্রান্ত প্রতিটি রোগীর তথ্য সরকারি ভাবে নথিভুক্ত রাখতে হবে। মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্তের তথ্য পাঠাতে হবে স্বাস্থ্য দফতরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতিটি জেলা হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে ওই রোগের চিকিৎসা হবে। তার জন্য ৮ চিকিৎসকের একটি বিশেষ দল তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে ওই সব হাসপাতাল থেকে আঞ্চলিক-রেফারাল হাসপাতাল হিসেবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী পাঠানো যাবে। তবে তার থেকেও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে শীর্ষ রেফারেল হাসপাতাল বা মিউকরমাইকোসিস চিকিৎসার উৎকর্ষ কেন্দ্র এসএসকেএমে রোগী পাঠানো যাবে। ছত্রাকঘটিত ওই রোগের চিকিৎসার পরামর্শের জন্য রাজ্য স্তরের কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তার চেয়ারপার্সন করা হয়েছে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক চিকিৎসক বিভূতি সাহাকে।
অজয় চক্রবর্তী জানান, এ দিন পর্যন্ত রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত ১২ জনের খোঁজ মিলেছে। তার মধ্যে কোভিড অথবা কোভিড পরবর্তী অবস্থায় রয়েছেন ছয় জন। বাকি কয়েক জন করোনা আক্রান্ত না হলেও অনিয়ন্ত্রিত সুগারে আক্রান্ত বলেই জানা গিয়েছে। এ দিন পর্যন্ত রাজ্যে তিন জনের ওই রোগে মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ২ জনের মৃত্যুর কারণ ওই ছত্রাকঘটিত রোগ বলেই জানা গিয়েছে। আরেক জনের মৃত্যুর কারণ মিউকরমাইকোসিসই কি না তা স্বাস্থ্য দফতর খতিয়ে দেখছে।