West Bengal SSC Scam

‘কত দিন বন্দি রাখবেন?’ কল্যাণময়ের জামিনের আবেদনের মামলায় সিবিআইকে প্রশ্ন হাই কোর্টের

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের জামিন মামলায় এর আগেও সিবিআইকে ভর্ৎসনা করেছিল হাই কোর্ট, অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৩০
Share:

কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় গত ১৩ ডিসেম্বর জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টে। ফাইল চিত্র।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে জামিন দিল না কলকাতা হাই কোর্ট। তবে তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করলেও আদালত পাল্টা প্রশ্ন করেছে সিবিআইকেই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘জোরালো যুক্তি না থাকলে এক জনকে কত দিন বন্দি করে রাখতে পারবেন?’’

Advertisement

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কল্যাণময় সিবিআইয়ের মামলায় আপাতত জেলে। বুধবার তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করলেও হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আবার তারা মামলাটি শুনবে।

গত ১৩ ডিসেম্বর কলকাতা হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন কল্যাণময়। আদালত এ প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু গত ২২ ডিসেম্বর জামিন মামলার পরবর্তী শুনানিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। বুধবারও সিবিআইকে বিচারপতি বাগচীর পরামর্শ— ‘‘নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেনের ভাল করে তদন্ত করুন। অযোগ্যদের তো আর ভালবেসে চাকরি দেওয়া হয়নি!’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কল্যাণ ১১৩ দিন ধরে জেলে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও পেশ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কল্যাণময়ের আইনজীবী বলেছিলেন, তাঁর মক্কেলের শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তা ছাড়া স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা। তাঁর দেওয়া সুপারিশপত্র মেনেই নিয়োগ করা হয়েছে। বুধবার এ ব্যাপারে আদালতের প্রশ্নের জবাবে সিবিআই জানিয়েছে, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও প্রচুর অযোগ্যকে নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্তে বেনিয়ম দেখেই গ্রেফতার করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, এর আগেও আদালত কল্যাণময়ের মামলায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভর্ৎসনা করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। বিচারপতি বাগচী সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, এই মামলায় কল্যাণময়ের ভূমিকা ঠিক কী?

পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির জামিন নিয়ে সিবিআই কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারেনি সে দিন। সে ব্যাপারেও বিচারপতি বাগচী বলেছিলেন, ‘‘আপনারা বিচারপতির অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে যান। তিনি আপনাদের বুঝিয়ে দেবেন। আপনারা কিছুই করছেন না। আপনাদের তদন্তকারী অফিসার কোথায়?’’ এমনকি সিবিআই বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারছে না জানিয়ে বিচারপতি বাগচী এ-ও বলেছিলেন যে, “বিষয়ের গুরুত্ব আগে সিবিআইয়ের নিজের একটু বোঝা উচিত। আমরা খুবই দুঃখিত যে এমন তদন্তকারীদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আপনারা তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে দয়া করে বসুন। বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করুন।’’ এর পরই আগামী ৪ জানুয়ারি অবধি মামলাটির শুনানি স্থগিত রেখেছিল হাই কোর্ট। বুধবার সেই শুনানি হল।

এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর টানা জেরার পরে গ্রেফতার করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি কল্যাণময়কে। ২০১০ সাল থেকে টানা প্রায় ১০ বছর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি থাকাকালীন শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতে কল্যাণময়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে সিবিআই অভিযোগ করে। এর আগে বিশেষ সিবিআই আদালত এবং হাই কোর্টে কল্যাণময়ের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement