নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি ইডি হেফাজতে নিয়েছে শাসকদল তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তলকে। তাই নিয়েই মন্তব্য করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আদালতে তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তল ঘোষের নাম উঠতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ভরা আদালতে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এটা কী চলছে? কয়েক জন দুষ্কৃতী মিলে কি রাজ্যটাকে ধ্বংস করে দেবে!’’ একই সঙ্গে কুন্তলের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে তিনি জানতে চাইবেন বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি।
রাজ্যের স্কুলে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির বহু মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচারাধীন। তবে কুন্তলের মামলাটি তাঁর এজলাসে আসেনি। সোমবার একটি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতেই তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তলের প্রসঙ্গ ওঠে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে। শুনানি চলাকালীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী আদালতে জানান, সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারছি কুন্তলের বাড়ি থেকে ১৮৬টি ওএমআর শিট এবং অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া গিয়েছে। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিচারপতি বলেন, ‘‘যা চলছে দেখছি, তাতে মনে হয় কিছু দুষ্কৃতী রাজ্যটাকে ধ্বংস করে দেবে। কী ভাবে কুন্তলের কাছে যেতে পারে ওএমআর শিট এবং অ্যাডমিট কার্ড? এ নিয়ে ইডির কাছে জানতে চাইব।’’
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতিই ইডি হেফাজতে নিয়েছে শাসকদল তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তলকে। ইডি সূত্রে খবর, তাঁকে জেরা করে ইডি আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, তাঁর মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে অন্তত ৩৫ জনের চাকরি হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের প্রায় প্রত্যেকেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে, অর্থাৎ নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, অবৈধ উপায়ে চাকরি পাওয়া স্কুলশিক্ষকরা মূলত মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা।
বিষয়টি সোমবার নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেও ওঠে। যা শুনে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘পর্ষদে কারা বসে রয়েছেন? এই দুর্নীতির পরও আদালতকেই কাঠগড়ায় তোলা হয়।’’ এ ব্যাপারে নাম না করে রাজ্যের প্রশাসনকে দোষারোপও করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কিছু পদক্ষেপ করেন না, আর আদালত কিছু করলে সে দিকেই আঙুল তোলা হয়।’’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এর সঙ্গে যুক্ত কাউকে ছাড়া হবে না! অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে দুর্নীতি ঢাকার চেষ্টাও বরদাস্ত করা হবে না।’’