পার্থের আইনজীবী সুকন্যা ভট্টাচার্য (বাঁ দিকে), পার্থ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ফাইল ছবি।
দলের প্রতি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অগাধ আস্থা রয়েছে। দল তাঁকে মন্ত্রিত্ব বা মহাসচিবের পদ থেকে সরিয়ে দিলেও তিনি বিধায়ক পদ ছাড়বেন না। শনিবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে পার্থের সঙ্গে দেখা করার পর আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে এমন দাবিই করলেন তাঁর আইনজীবী সুকন্যা ভট্টাচার্য। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, জেলে তাঁর মক্কেলের সঙ্গে সাধারণ কয়েদিদের মতোই ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁর মক্কেল পার্থ।
শুক্রবারই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর বিশেষ আদালত, পার্থকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ওই দিন রাত থেকে প্রেসিডেন্সি সংশোধাগারে বন্দি রয়েছেন পার্থ। শুক্রবারই ব্যাঙ্কশাল আদালতে পার্থের এক আইনজীবী কৃষ্ণচন্দ্র দাসের বক্তব্যে জল্পনা তৈরি হয়। কোর্ট রুম থেকে বেরিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘বার বার প্রভাবশালীর কথা বলা হচ্ছিল, আইনজীবী হিসেবে আমি বলেছি, সে ক্ষেত্রে তিনি (পার্থ) বিধায়ক পদ ছেড়ে দেবেন।’’ তার পরেই জল্পনা তৈরি হয়, তা হলে কি সত্যিই এ বার পরিষদীয় রাজনীতির সঙ্গে পার্থের শেষ সম্পর্কটুকুও চুকে যাবে? পার্থ কি বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পদ ছেড়ে দেবেন? ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই সেই জল্পনায় জল ঢাললেন পার্থের অন্য এক আইনজীবী— সুকন্যা।
শনিবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে পার্থের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন সুকন্যা। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পার্থবাবু কোনও ভাবেই বিধায়ক পদ ছাড়বেন না।’’ সুকন্যার দাবি, ‘‘দল এবং নেত্রীর উপর ওঁর (পার্থের) সম্পূর্ণ আস্থা আছে। এবং তিনি পূর্ণ মেয়াদ বিধানসভায় থাকতে চান। আইনের উপরেও তাঁর আস্থা রয়েছে।’’ তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব তাঁকে এ কথা জানিয়েছেন বলে দাবি সুকন্যার।
তা হলে শুক্রবার কৃষ্ণচন্দ্র সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন কথা বললেন কেন? তারও জবাব দিয়েছেন সুকন্যা। তিনি বলেন, ‘‘ওখানে তো অনেকে আছেন। হঠাৎ করে কেউ সংবাদমাধ্যমের সামনে এমনটা বলে ফেলেছেন! কিন্তু এ রকম কোনও কথাই কারও সঙ্গে ওঁর হয়নি। উনি (পার্থ) বলেছেন, বিধায়কপদ এখন ছাড়বেন না। উনি বিধায়ক হিসেবেই থাকছেন। দল ও নেত্রীর উপর ওঁর সম্পূর্ণ আস্থা আছে, এ কথা তিনি নির্দিষ্ট করে বলেছেন।’’
পাশাপাশি সুকন্যা জানিয়েছেন, জেলে আর পাঁচ জন সাধারণ কয়েদির মতোই পার্থের সঙ্গে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন পার্থ। তবে, শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলেও আইনজীবীর কাছে অভিযোগ করেছেন পার্থ। সে ব্যাপারে জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন সুকন্যা। তিনি বলেন, ‘‘একটি ছোট্ট ঘরে মাটিতে শুয়ে আছেন। বিছানার চাদরও নেই। জেলে সাধারণের চেয়েও সাধারণ ভাবে ওঁকে ট্রিট করা হচ্ছে। কোনও রকম অতিরিক্ত সুযোগসুবিধা তিনি নিতেও চাইছেন না।’’