স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিস। —ফাইল চিত্র।
তফসিলি জনজাতি চাকরিপ্রার্থীদের জাতিগত শংসাপত্র খতিয়ে দেখতে রাজ্যের ৩২ জন মহকুমাশাসককে চিঠি দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। সম্প্রতি ওই চিঠি জেলাশাসকদের পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, ‘ভুয়ো’ জাতিগত শংসাপত্র ব্যবহার করে নবম-দশম শ্রেণিতে চাকরি পেয়েছেন বহু সাধারণ প্রার্থী! বঞ্চিত করা হয়েছে তফসিলি জনজাতি প্রার্থীদের। এই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলাতেই ‘ভুয়ো’ শংসাপত্র এবং বেআইনি চাকরি ধরতে এসএসসি-কে নথি আনতে বলে আদালত। তার পরই জেলায় জেলায় মহকুমাশাসকের দফতরে যায় এসএসসি-র চিঠি। চিঠির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জেলার চাকরিরতদের নামের তালিকা পাঠায় এসএসসি। প্রকৃত শংসাপত্র ব্যবহার করা হয়েছে কি না, নামগুলির সঙ্গে তা যাচাই করতে হবে মহকুমাশাসকদের।
২০১৬ সালের নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার হেমাবতী মাণ্ডি। লিখিত পরীক্ষায় তিনি পাশ করেন বলে দাবি। ডাক পান পার্সোনালিটি টেস্টেও। কিন্তু তার পর আর ফলাফল জানা যায়নি বলে দাবি করেন হেমাবতী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সংরক্ষিত তালিকায় তফসিলি জনজাতি হওয়া সত্ত্বেও তিনি চাকরি পাননি। এমনকি, ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রকাশিত মেধাতালিকাতেও নাম নেই। অথচ কম নম্বর পেয়েও অনেকে চাকরি পেয়েছেন।’’এর পরই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন হেমাবতী। তাঁর আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, ‘‘অনেক সাধারণ প্রার্থীকে ভুয়ো তফসিলি জনজাতি (এসটি)-র শংসাপত্র দিয়ে মেধাতালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বঞ্চিত হন প্রকৃত এসটি প্রার্থীরা। আমাদের কাছে এমন ১০০ জনের তথ্য রয়েছে।’’
মামলাকারীর দাবির সত্যতা রয়েছে কি না, তা জানতে চাকরিরতদের শংসাপত্র এসএসসি-র কাছে তলব করে হাই কোর্ট। যে হেতু শংসাপত্র প্রদান করেন মহকুমাশাসক, তাই শংসাপত্র যাচাই করতে তাঁদের চিঠি দেয় এসএসসি। প্রসঙ্গত, এর আগে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার কারণে বহু শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে হাই কোর্ট। এ বার এক শ্রেণির প্রার্থীদের প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে ফের ‘বেআইনি’ চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত কী পদক্ষেপ করে তা দেখার।