শুক্রবারই ১৯১১ জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি বাতিলের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানালেন স্কুল থেকে চাকরি যাওয়া গ্রুপ ডি কর্মীরা। সোমবার হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি উঠেছে। যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের হয়ে আদালতে সওয়াল করছেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ, অনিন্দ্য লাহিড়ী এবং পার্থ দেববর্মণ।
শুক্রবারই বেআইনি নিয়োগের অভিযোগে এসএসসি নিযুক্ত ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি বাতিল করেছিল হাই কোর্ট। ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ। সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চে।
শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ১৯১১ জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘অবিলম্বে ১৯১১ জন গ্ৰুপ ডি কর্মীর সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করতে হবে। আমার বিশ্বাস, বেআইনি ভাবে, দুর্নীতি করে এই সব প্রার্থীদের সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল।’’ একই সঙ্গে বিচারপতি এও জানিয়েছিলেন, “যে প্রার্থীদের সুপারিশপত্র বাতিল করা হবে, তাঁরা অন্য কোনও চাকরির পরীক্ষায় আর বসতে পারবেন না।’’ সেই নির্দেশের পরই স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই কর্মীদের সুপারিশ প্রত্যাহার করে নেয় এসএসসি। পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও এ প্রসঙ্গে জানান, আদালত যা করতে বলবে, তা-ই করব। চাকরি যাওয়া গ্রুপ ডি কর্মীরা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধেই আদালতে পাল্টা আবেদন করেছেন।
যদিও গত শুক্রবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীই আদালতে স্বীকার করে নেন, ১৯১১ জন গ্ৰুপ ডি প্রার্থীকে অন্যায় ভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্নে কমিশন তথ্য যাচাই করে আদালতে হলফনামা দিয়ে স্বীকার করে, ওই সব প্রার্থীর উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এ কারচুপি করে চাকরির সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার আদালতে এসএসসির আইনজীবী দাবি করেছিলেন, গ্রুপ ডি নিয়োগের ক্ষেত্রে ২,৮১৯ জনের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এ কারচুপি করা হয়েছে। কমিশনের আইনজীবী এও জানিয়েছিলেন, তাদের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কারচুপি যে হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ওই ২,৮১৯ জনের মধ্যে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন ১,৯১১ জন। তাঁদেরই চাকরি বাতিলের সুপারিশ করেছিল হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ।