উরমায় তৃণমূল অফিসে সৃষ্টিধর মাহাতো। নিজস্ব চিত্র
প্রকাশ্য সভায় তৃণমূলনেত্রী তাঁর নাম করে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সৃষ্টিধর মাহাতো অবশ্য সামনাসামনি তা শোনেননি। কারণ, বুধবার পুরুলিয়ার বলরামপুরের সভায় যাননি জেলা পরিষদের এই প্রাক্তন সভাধিপতি।
উরমায় টালির চালের পার্টি অফিসের খাটিয়ায় বসেছিলেন সৃষ্টিধর। বললেন, ‘‘দল দূরত্ব রেখে চলছে। তাই নিজে যাইনি। যাকে-যাকে পারি, সভায় যেতে বলেছি।’’
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরুলিয়ায় প্রথম সভা করতে এসেছিলেন ২০১১ সালে। তখন সৃষ্টিধর তৃণমূলের বলরামপুর ব্লক সভাপতি। মাওবাদীদের সঙ্গে ‘টক্কর’ নিতে পারেন, এমন ভাবমূর্তি ছিল দলের অন্দরে। পরে জেলা সভাধিপতি হন। কিন্তু এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে হেরেছেন। তাঁর ‘গড়’ বলরামপুরে হেরেছে তৃণমূল। এ দিন বলরামপুর কলেজ-মাঠের মঞ্চ থেকে মমতা বলেছেন, ‘‘সৃষ্টির কাজকর্ম আমরাও পছন্দ করতাম না। শুধু ওর উপরে রাগ আছে বলে আমি কি বিজেপিকে ভোট দিয়ে দেব?’’ সৃষ্টিধরের অবশ্য দাবি, ভোটে তাঁর একার কারণে হারেনি দল।
আরও পড়ুন: ‘দিদি কাজ করেছেন, ওরা করতে চায় না’
পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতোর খুনে সৃষ্টিধরের বড় ছেলে সন্দীপকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি বলেন, ‘‘ও দোষী না নির্দোষ, সেটা প্রমাণিত হোক। আমি কিছু বলব না।’’ ত্রিলোচনের পরিজনেরা এ দিন বাড়িতেই ছিলেন। জানালেন, তাঁদের গ্রাম সুপুরডি থেকে একটি বাস লোকজন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গিয়েছে। ভোটের সময়ে দেহ মিলেছিল বলরামপুরের ডাভা গ্রামের বিজেপি কর্মী দুলাল কুমারেরও। তাঁর পরিজনদের কেউও যাননি সভায়। দুলালের বাড়ির কাছে মোবাইলে সভার সম্প্রচার দেখছিলেন কয়েক জন। সৃষ্টিধর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য শুনে উড়ে আসে তাঁদের টিপ্পনী, ‘‘সব তোলাবাজির ফল।’’ হেসে অভিযোগ উড়িয়ে সৃষ্টিধর বলেন, ‘‘পাঁচ বছরে এলাকার উন্নয়ন ছাড়া কিছু করিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী। তৃণমূল আমার দল।’’