ক্যালেন্ডারে ফাল্গুনের পাতা এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু তার আগেই স্পষ্ট হচ্ছে গ্রীষ্মের আগমনি!
শনি ও রবিবার বিহার ও বঙ্গের জেলাগুলির কোথাও কোথাও কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাতে আপাতত স্বস্তির কোনও আশা নেই। উল্টে আবহবিদদের ঘোষণা, আজ, সোমবার এবং কাল, মঙ্গলবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দিনের তাপমাত্রা বাড়বে। বা়ড়বে গরম। তাই অস্বস্তিও চলবে তাল মিলিয়ে।
হাওয়া অফিসের খবর, ছত্তীসগঢ়ের আকাশে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। তার টানে জোলো হাওয়া ঢুকছে বঙ্গোপসাগর থেকে। মার্চের গোড়াতেই তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জোলো হাওয়া বায়ুমণ্ডলের উপরে উঠে ঘনীভূত হয়ে মেঘ তৈরি করছে। বিহারের গয়া-সহ কিছু এলাকায় তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। রেডার-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানান, রবিবার বিকেলেও ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমানায় বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তা থেকে কোনও কোনও এলাকায় অল্পবিস্তর বৃষ্টিও হয়েছে। কলকাতার আকাশে মেঘ থাকলেও বৃষ্টি হয়নি।
কলকাতা বঞ্চিত হচ্ছে কেন?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, গ্রীষ্মের আগমনি শোনা যাচ্ছে ঠিকই। তবে এখনও তাপমাত্রা সে-ভাবে বাড়েনি বলে বড় আকারের বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হচ্ছে না। তাই খুব বেশি এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে না। বেশি বর্ষণও হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘এ দিনের বৃষ্টির পরে সোমবার থেকে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে। ফলে দিনের তাপমাত্রা বাড়বে। আগামী দু’দিন কলকাতার তাপমাত্রা ৩৪-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে।’’ আবহবিদদের ধারণা, পশ্চিমের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা কলকাতার তুলনায় সামান্য বেশি থাকতে পারে। চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি ফের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। তার প্রসাদ পেতে পারে কলকাতাও।
গরম এ বার কতটা ভয়াল আকার নিতে পারে, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় শীত তো মেলেইনি। ভরা পৌষে কনকনে ঠান্ডা দূরের কথা, মাঝেমধ্যে রীতিমতো গরমও লেগেছে! মাঘের শুরু থেকেই চড়তে শুরু করেছিল পারদ। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ঘরে ঘরে ফ্যান চালানো শুরু হয়ে যায়। ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতা, গরম যেন ক্রমশই এগিয়ে আসছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এবং বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছরই উষ্ণতা বেড়ে চলেছে। গরমের লড়াইয়ে ২০১৪ সালকে টেক্কা দিয়েছিল ২০১৫। আবার ২০১৫-কে হারিয়ে দিয়েছিল ২০১৬। এই ক্রমবর্ধমান গরমের জন্য বিশ্ব উষ্ণায়নকেই দায়ী করছেন আবহবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদেরা।
পারদের বর্ষপঞ্জি বিশ্লেষণ করে এ বার অনেকেরই প্রশ্ন, ২০১৭ কি ২০১৬ সালের রেকর্ড ভেঙে দেবে?