Amit Shah

শাহ আক্রমণই করলেন না তৃণমূলকে, চর্চা

রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্মপদ্ধতি নিয়ে আলোচনা শেষের জবাবি বক্তৃতায় অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ এবং শাসক দল তৃণমূলের নামও উচ্চারণ করলেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ১০:০৪
Share:
অমিত শাহ।

অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।

প্রত্যাশা ছিল ঝড়ের। কিন্তু দিনশেষে দেখা গেল, সামান্য মেঘও গর্জাল না।

Advertisement

আজ রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্মপদ্ধতি নিয়ে আলোচনা শেষের জবাবি বক্তৃতায় অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ এবং শাসক দল তৃণমূলের নামও উচ্চারণ করলেন না। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল বিব্রত হবেন এমন কোনও প্রসঙ্গ কার্যত এড়িয়েই গেলেন। নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন বটে, তবে তা ‘মৃদু’ই। অথচ বুধবার রাজ্যসভায় এই সংক্রান্ত আলোচনার শুরুতে তৃণমূলের সাংসদ সাকেত গোখলে বিঁধেছিলেন শাহকে। সে দিন তাঁর সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজেজু এবং জে পি নড্ডাও। গত কাল গোটা দিনই বিষয়টি নিয়ে বাজার গরম করেছে তৃণমূল। এই নিয়ে দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন কথা বলেছেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে। সেই যুদ্ধের মেজাজ আজও অব্যাহত রাখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। আজও যখন প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং প্রাইভেট মেম্বার বিল মুলতুবি রেখে শাহের জবাবি বক্তৃতার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার, তখনও প্রতিবাদে গোটা দিনের জন্য কক্ষত্যাগ করেছেন তৃণমূল সাংসদেরা।

এর পর ভাবা গিয়েছিল, ফাঁকা মাঠে একতরফা তৃণমূলকে বিঁধতে পারেন শাহ। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের বাকি মাত্র এক বছর। তবে সে রকম কিছুই হল না। শাহের দীর্ঘ বক্তৃতায় নাম না করে মমতা ও তৃণমূলের প্রসঙ্গ উঠেছে মাত্র দু’বার, তাও যথেষ্ট মৃদু ভাবে।

Advertisement

তৃণমূল অবশ্যই একে নিজেদের জয় হিসেবেই দেখাতে চাইছে। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, ‘বাংলার সাংসদ যে বিষয়গুলি তুলেছিলেন তার কোনও উল্লেখ নেই, বাংলা নিয়ে একটি লাইনও নেই অমিত শাহের বক্তৃতায়। এগারো বছরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সবচেয়ে নম্র জবাব এটি। বুধবারের সংঘাতের কারণেই কি সেটা হল?’

রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলায় রাজনৈতিক প্রবল প্রতিপক্ষ তৃণমূলকে এমন সুযোগ পেয়েও কেন ছেড়ে দিলেন শাহ। বাম শিবিরের বক্তব্য, ‘দিদি-মোদী সেটিং-এর যে তত্ত্ব আমরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছি, তা আজ আবারও প্রমাণিত হয়ে গেল।’ যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বুধবার যে ভাবে এক নবীন সাংসদ সাকেতের বিরুদ্ধে শাসকদলের তিন হেভিওয়েট মন্ত্রী ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাতে কার্যত মুখ পুড়েছে তাঁদেরই। তাই তাঁরা আজ আর কথাবাড়াতে চাননি।

তবে নাম না নিলেও শাহ আজ কটাক্ষ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। গত কয়েক বছরে কেন্দ্র-রাজ্যের যে বিভিন্ন বৈঠক হয়েছে তাতে অনেক সময়ই উপস্থিত থাকেননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আজ সেই প্রসঙ্গ তুলে শাহ বলেছেন, “এই ধরনের বৈঠকগুলিতে মুখ্যমন্ত্রী তো আসেনই না, এমনকি, মুখ্যসচিবদেরও পাঠান না।” আগের দিন সাকেত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আজ সেই অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে সাকেতের নাম না নিয়ে শাহ বলেন, “এনআইএ-কে নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলেছেন এক সাংসদ। যদিও তিনি এখন জবাবি বিতর্কের সময়ে কক্ষে নেই।” আজ তৃণমূল রাজ্যসভায় না থাকলেও তাদের হয়ে ব্যাট ধরেছিলেন আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। তাঁর কথায়, ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২-এ কলকাতায় খুনের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৩, ৪৫ এবং ৩৪। আর যেখানে স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাসন করে এসেছেন সেই দিল্লিতে এই সংখ্যা ওই বছরগুলিতে যথাক্রমে ৪৬১, ৪৫৪ এবং ৫০১ জন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement