ফাইল চিত্র।
বেলুড় মঠের দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণ কুমারী পুজো। কিন্তু এখন করোনা সংক্রমণ রুখতে বন্ধ রয়েছে মঠ। আর সেই সূত্রেই সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, এ বছর দুর্গাপুজোয় কি বেলুড় মঠে ঢোকা যাবে? কুমারী পুজোরই বা কী হবে?
ভক্ত ও দর্শনার্থীদের এ হেন কৌতূহলের স্পষ্ট উত্তর না মিললেও বেলুড় মঠ সূত্রের খবর, রীতি মেনে পুজো হলেও করোনা সংক্রমণ যাতে কোনও ভাবে না-ছড়ায়, সে দিকে বিশেষ জোর দেওয়া হবে। অতিমারির পরিস্থিতিতে কুমারী এবং তার পরিবারের যে সদস্যেরা উপস্থিত থাকবেন, তাঁদের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে তাঁরা সংক্রমিত না হন বা সংক্রমণ না ছড়ায়।
মঠ সূত্রের খবর, প্রতি বছর একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কুমারীকে বেছে নেন মঠ ও মিশন কর্তৃপক্ষ। তবে গোটা প্রক্রিয়াই অত্যন্ত গোপনীয়। এক প্রবীণ সন্ন্যাসী বলেন, ‘‘কুমারীর সঙ্গে তার বাবা-সহ পরিবারের দু’তিন জন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পুজোর সময়ে উপস্থিত থাকেন। তাই
তাঁদের বিষয়েও যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছে।’’ তবে কোনও বিষয়েই এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানাচ্ছেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ।
তিনি বলেন, ‘‘অতিমারির পরিস্থিতি একই ভাবে চলতে থাকলে এ বছর পুজোয় দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।’’ ১৯০১ সালে মঠ প্রাঙ্গণে মণ্ডপ নির্মাণ করে প্রথম দুর্গাপুজো হয়েছিল। তার পরে মূল মন্দিরের ভিতরেই পুজো হত। ২০০১ সাল থেকে ওই মন্দির সংলগ্ন মাঠে মণ্ডপ করে পুজো হয়ে আসছে। আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বছর পুজো হবে মূল মন্দিরের ভিতরে। মঠ কর্তৃপক্ষের কথায়, ‘‘বেলুড় মঠ একটি আধ্যাত্মিক কমপ্লেক্স। বেদ বিদ্যালয়, ব্রহ্মচারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সন্ন্যাসীদের থাকার জায়গা রয়েছে ভিতরে। তাই দর্শনার্থীদের সুরক্ষার
পাশাপাশি আবাসিক সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী এবং কর্মীদের কথাও মাথায় রাখতে হবে।’’
মঠ সূত্রের খবর, সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী ও কর্মী মিলিয়ে বেশ কয়েক জন আবাসিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফোনে সন্ন্যাসীদের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি এম বেঙ্কাইয়া নায়ডু। স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, ‘‘এ বছর পুজোয় আবেগের সঙ্গে যুক্তি এবং ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের সমন্বয়ের দিকে আয়োজকদের নজর দেওয়া উচিত।’’