ফাইল চিত্র।
পাড়ায় শিক্ষালয় শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে সেই সব পড়ুয়াকে মিড ডে মিল খাওয়ানোর ব্যবস্থাও। কিন্তু দক্ষিণ দিনাজপুরের বহু জায়গায় পাঁচ দিন ধরে মিড ডে মিল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেক প্রাথমিক স্কুলকে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পড়ুয়ার সংখ্যা বহু ক্ষেত্রেই অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। তার ফলেই এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বালুরঘাট, তপন, গঙ্গারামপুরের একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাওয়ানোর জন্য মাথা পিছু বরাদ্দ পাঁচ টাকারও কম। এত দিন পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি থাকায় বেশি পরিমাণে চাল-ডাল কিনতে গেলে দাম কিছুটা কমানো সম্ভব হত। অনেক সময়ে দিনে গড়ে যে সংখ্যক পড়ুয়া আসার কথা, তার থেকে কম এলেও গড়ের হিসাবে বরাদ্দ পেত স্কুল। তাতেও কুলিয়ে যেত।
করোনা আবহে প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পরে সদ্য শুরু হয়েছে পাড়ায় শিক্ষালয়। স্কুলগুলির দাবি, বেশির ভাগ প্রাথমিক স্কুলেই খাতায়কলমে যত সংখ্যক পড়ুয়া আছে, শিক্ষালয়ে আসছে তার অর্ধেক। বালুরঘাটের আনন্দবাগান প্রাথমিক স্কুল বা প্রাচ্যভারতী প্রাথমিক স্কুলে এই চিত্র। মোটামুটি একই ছবি তপনের মতো পিছিয়ে পড়া এলাকায়। এর মধ্যে আবার সংশ্লিষ্ট অবর স্কুল পরিদর্শক দফতর থেকে সকাল ১১টার মধ্যে রোজ পড়ুয়া উপস্থিতির সংখ্যা জানতে চাওয়া হচ্ছে। ওই রিপোর্ট ডিপিএসসি হয়ে বেলা ১২টার মধ্যে রাজ্য শিক্ষা দফতরে পৌঁছচ্ছে। সেই হিসাবে মাথা পিছু ৪ টাকা ৯৭ পয়সা করে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে বলেই সরকারি সূত্রে খবর। নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘দু’বছরে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। ফলে মাথা পিছু ওই সামান্য টাকায় এক হাজার টাকার গ্যাস সিলিন্ডার কিনে মিড ডে মিলে ডিম দূর অস্ত্। ভাতের সঙ্গে ডাল ও তরকারি দেওয়াই অসম্ভব হয়ে উঠেছে।” পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি সুকান্ত মণ্ডল জানান, কোভিড পরিস্থিতির সময় ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি স্কুল বন্ধ হওয়ার আগে পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ ছিল ৪ টাকা ১৩ পয়সা। দু’বছর পরে মাত্র ৮৪ পয়সা বাড়িয়ে কী করে মিড ডে মিলে ডিম দিতে বলেন, বোধগম্য নয়।