West Bengal Assembly Election 2020

শুভেন্দুকে নিয়ে চর্চা, অমিতের ‘ধরিত্রীপুত্র মুখ্যমন্ত্রী’ কে, জল্পনা

বোলপুরে শাহ বললেন, ‘‘বাংলার মাটি থেকে উঠে আসা কোনও ধরিত্রীপুত্রকেই এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করা হবে।’’

Advertisement

রোশনী মুখোপাধ্যায়

বোলপুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১০
Share:

বোলপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রোড শো। রবিবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

কে সেই ‘ধরিত্রীপুত্র’, যাঁকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চায় বিজেপি? অমিত শাহের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ফের জাঁকিয়ে বসল জল্পনা।

Advertisement

বিজেপির ক্ষমতায় আসা যে নিশ্চিত, সেই দাবি করে রবিবার বোলপুরে শাহ বললেন, ‘‘বাংলার মাটি থেকে উঠে আসা কোনও ধরিত্রীপুত্রকেই এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করা হবে।’’ প্রচুর ঢাকঢোল পিটিয়ে শাহের সভামঞ্চে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদান পর্ব সম্পন্ন হয়েছে শনিবার। সেখানে শাহ বলেছিলেন, ‘‘শুভেন্দু ভাইয়ের নেতৃত্বে তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম— সব দলের ভাল লোকেরা যোগদান করছেন।’’ তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী প্রসঙ্গে শাহের এ দিনের মন্তব্যের তাৎপর্য বোঝার চেষ্টা করছে রাজনৈতিক মহল।
আগামী নির্বাচনে বিজেপির সম্ভাব্য মুখ হিসেবে একাধিক নাম নিয়ে চর্চা চলছে কিছু দিন ধরেই। সেখানে বার বার সামনে আসছে বাংলার ‘দাদা’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। যদিও বিজেপি বা সৌরভ কারও তরফ থেকেই এই নিয়ে একটি শব্দও খরচ করা হয়নি। তবে এ ক্ষেত্রে সেই নীরবতাকেও অনেকে অর্থবহ বলে মনে করেন। বিজেপির একাংশের অবশ্য অভিমত, সৌরভ আপাত ভাবে রাজনীতির লোক নন এবং বাঙালির ‘আইকন’ হিসেবে দলমত নির্বিশেষে সাধারণের মধ্যে তাঁর নিজস্ব জনপ্রিয়তা আছে। সেটা ‘কাজে’ লাগাতে পারলে খারাপ হবে না।

অন্য দিকে, শুভেন্দু যে তৃণমূলে থাকাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন, সেই খোঁচা শনিবারই দিয়েছেন তৃণমূলের লোকসভার সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় ফেরার পথে শনিবার বিজেপির অন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে শুভেন্দুকেও তাঁর হেলিকপ্টারে ডেকে নেন শাহ। পরে রাতে বিজেপির উচ্চ পর্যায়ের সাংগঠনিক বৈঠকেও শুভেন্দু প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন। সূত্রের খবর, সেখানে তিনি শাহকে বলেছেন, এমন সাংগঠনিক বৈঠকের অভিজ্ঞতা তাঁর আগে হয়নি। তিনি এ বার নতুন করে ছাত্রের মতো সব কিছু শিখে নিতে চান। বোলপুরে এ দিন শাহের কোনও কর্মসূচিতে অবশ্য শুভেন্দুকে দেখা যায়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীতে শাহের সঙ্গী কেন বিজেপি নেতারা, প্রশ্ন

বিজেপির মধ্যেও শুভেন্দুর ‘সাংগঠনিক দক্ষতা’র প্রশংসা শোনা যায়। ওই দলের অন্দরে অনেকের এমনও ধারণা, আপাতত ‘বহিরাগত’ হয়ে দলে ঢুকলেও অচিরেই তিনি বিজেপির অন্য নেতাদের ‘প্রতিযোগিতা’য় ফেলে দিতে পারেন। যদি তা হয়, তবে ওই দলের সাংগঠনিক ভারসাম্যে এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, সেই প্রশ্নও কিন্তু ঘুরছে।

সম্ভাব্য মুখ অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শুভেন্দুর নাম নিয়ে প্রশ্নে শাহ কিন্তু আমল দিতে চাননি। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, শুভেন্দু বিজেপি যোগ দেওয়ার পর দিনই আপনি বাংলার মাটি থেকে উঠে আসা কোনও ধরিত্রীপুত্রকে মুখ্যমন্ত্রী করার কথা বলছেন। এটা কি কোনও ইঙ্গিত? তিনি বলেন, ‘‘আমি কারও নাম বোঝাতে চাইনি। বাংলায় অনেক ধরিত্রীপুত্র আছেন। মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা ঠিক করবে বিজেপির সংসদীয় বোর্ড।’’ ভোটের আগে কি তা জানা যাবে? শাহের উত্তর, ‘‘যখন ঠিক হবে, তখন জানানো হবে।’’ উল্লেখ্য, তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার পরে শুভেন্দু বার বার নিজেকে ‘ভূমিপুত্র’ হিসেবেই তুলে ধরেছেন।

আরও পড়ুন: বাইরের লোক আনতে হয় না: অনুব্রত

তবে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণবাবু এই সব জল্পনা নস্যাৎ করে দাবি করেন, ‘‘বাংলার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য কারও কোনও সুযোগ নেই। এখানে মীরজাফরদের জায়গা হয় না! বাঙালি তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’’

বিভিন্ন অভিযোগ বা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের বিজেপি দলে নিয়ে চলেছে, এই প্রশ্ন ফের সামনে এসেছে শুভেন্দুর যোগদান এবং নারদ-কাণ্ডের সঙ্গে যোগসূত্রের প্রেক্ষিতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ অবশ্য এ দিন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে বিজেপিতে এলেই কিছু মাফ হয়ে যায় না। বিজেপির কোনও নেতা-কর্মী আইনের ঊর্ধ্বে নন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement