Special Task Force

Arrest: গোপন ফোন এক্সচেঞ্জ চক্র ফাঁস, জালে ৩

ল্যাপটপ, ডেটা-কেব্‌ল এবং মোবাইল যোগাযোগের অন্যান্য যন্ত্রপাতিও বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:১৭
Share:

নিজস্ব চিত্র।

সিম-বক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোপনে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ চালানো এবং সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে এক বাংলাদেশি-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম আবু সুফিয়ান মামুন, রণজিৎ নাহা ও ইরশাদ আলি মল্লিক। ধৃতদের কাছ থেকে ২৩টি সিম-বক্স, ১৭টি রাউটার ও সুইচ এবং ৬৫০টিরও বেশি প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে জঙ্গি-যোগের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

ওই তিন জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া গিয়েছে বিভিন্ন মোবাইল পরিষেবা সংস্থার ওয়াইফাই মোডেম। ল্যাপটপ, ডেটা-কেব্‌ল এবং মোবাইল যোগাযোগের অন্যান্য যন্ত্রপাতিও বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানায়, মামুন বাংলাদেশের নোয়াখালির বাসিন্দা। রণজিতের বাড়ি জলপাইগুড়ির পানপাড়া এলাকায়। তিনি শিলিগুড়ি আশ্রমপাড়ায় ভাড়া থাকতেন। ইরশাদ নদিয়ার নাকাশিপাড়ার বাসিন্দা। ধৃতদের বিরুদ্ধে এয়ারপোর্ট থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধি, ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাফ অ্যাক্ট, ইন্ডিয়ান ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফ অ্যাক্ট এবং ফরেনার্স অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

এসটিএফ সূত্রের খবর, দু’বছর ধরে বাংলাদেশে সিমকার্ডের ব্যবসা চালাচ্ছিলেন মামুন। রণজিৎ শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে আত্মীয়দের বাড়িতে মাসিক টাকার বিনিময়ে সিম-বক্স রেখে ওই টেলিফোন এক্সচেঞ্জ বানিয়েছিলেন। এসটিএফ সূত্রের খবর, নতুন প্রযুক্তি হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে মামুন ও রণজিৎ বুধবার রাতে ইরশাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সেই সময়েই তাঁদের পাকড়াও করে এসটিএফ।

Advertisement

—নিজস্ব চিত্র।

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার অভিযান চালিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর এলাকা থেকে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের জেরা করে ওই রাতে একই সঙ্গে বিধাননগর, কলকাতার আলিমুদ্দিন স্ট্রিট, শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে তল্লাশি চালিয়ে অনেক সিম-বক্স ও প্রচুর প্রি-অ্যাক্টিভিটেড মোবাইল সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়ছে।

রাজ্যে সিম-বক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ধরনের বেআইনি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ চালানোর অভিযোগ আগেও উঠেছে। এই প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে বিদেশ থেকে আসা কল স্থানীয় নম্বরের হিসেবে দেখানো যায়। যার ফলে সরকারের প্রচুর টাকা লোকসান হয়। শুধু তা-ই নয়, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারির ফাঁক গলে জঙ্গি বা আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্র নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখছিল— এমন সন্দেহ বা সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিতে পারছেন না গোয়েন্দারা।

ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, মূলত পশ্চিম এশিয়া এবং বাংলাদেশ থেকে কলিং কার্ডের মাধ্যমে ওই ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট কল আসত তাঁদের সিম-বক্সে। সিম-বক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে সেগুলিকে স্থানীয় নম্বরে পরিবর্তন করা যেত। তার ফলে সরকারএবং বিভিন্ন টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার ক্ষতি হচ্ছিল। এসটিএফ সূত্রের খবর, এই নম্বর পরিবর্তনের ফলে সেগুলি আদতে কোন নম্বর থেকে এসেছিল, তারও প্রমাণ থাকে না। তার ফলে এগুলি জঙ্গি এবং অপরাধ চক্রের লোকেদের কাছেও জনপ্রিয়। প্রতিটি সিম-বক্সে ৭০ থেকে ২৫৬টি প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিমকার্ড থাকে।

এ দিন দুপুরে মামুন, রণজিৎ এবং ইরশাদকে ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করানো হয়। ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম মহম্মদ মেহেতাব আলমের কাছে সরকারি আইনজীবী সুদীপ সরকার ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আর্জি জানান। বিচারক আট দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement