বারাসত সদর হাসপাতালের ওই বিশেষ ওয়ার্ড। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের করোনা মানচিত্রে উদ্বেগজনক অবস্থায় কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা। সংক্রমিত এবং মৃতের সংখ্যায় প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থান দখল নিয়ে দুই জেলার টক্কর চলছে রোজই। এ বার সেই উত্তর ২৪ পরগনাতেই কোভি়ড পরীক্ষার ফল হাতে না-পাওয়া সন্দেহজনক করোনা রোগীদের জন্য নেওয়া হল অভিনব উদ্যোগ। বারাসত সদর হাসপাতালে ওই ধরনের রোগীদের জন্য চালু হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড।
জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট— করোনার এ সব উপসর্গ রয়েছে, কিন্তু কোভিড পরীক্ষার ফল আসতে দেরি। সাধারণত ওই পরীক্ষায় সময় লাগে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা। অথচ এই সময়ে আতঙ্কের শেষ নেই। এমন অবস্থায় কোথায় থাকবেন রোগীরা? তাই ‘যে জন আছেন মাঝখানে’, তাঁদের জন্যই খোলা হয়েছে ৫০ শয্যার এই নতুন আইসোলেশন ওয়ার্ড। এখানে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য রয়েছে ২৫টি করে শয্যা। বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের সাংসদ কোটার টাকায় সম্প্রতি তৈরি হয়েছে ওই ওয়ার্ড।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষ ওই ওয়ার্ডে রয়েছে জরুরি বিভাগের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। আছে ১৬টি ভেন্টিলেটর। রয়েছে ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা। এ ছাড়া বাইপ্যাপ এবং নেবুলাইজারের ব্যবস্থাও রয়েছে ওই ওয়ার্ডে। হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষায় কোনও রোগীর করোনা ধরা না প়ড়লে তাঁকে জেনারেল মেডিসিন ওয়ার্ডে সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে রিপোর্ট পজিটিভ হলে তাঁকে নিকটবর্তী কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।’’ হাসপাতাল সুপার আরও বলেন, ‘‘করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলেও যদি কোনও রোগীর শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থেকে যায় তাঁদের জন্যও বিশেষ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে হাসপাতালে। তেমন রোগীদের জন্য খোলা হয়েছে ৬ শয্যার আরও একটি ওয়ার্ড।’’
আরও পড়ুন: মোট সুস্থ সাড়ে ৩ লক্ষ ছাড়াল, লাগাম সংক্রমণের হারে
আরও পড়ুন: অমিতের সফরের সময়ই ভোটে ‘সবক’ শেখানোর হুঁশিয়ারি বিমল গুরুংয়ের
নতুন ওয়ার্ড খোলার দিন থেকেই ভিড় করতে শুরু করেছেন সন্দেহজনক করোনা রোগীরা। জেলার ৬টি কোভিড হাসপাতালে রয়েছে প্রায় ৬০০টি শয্যা। এর পাশাপাশি কাছের হাসপাতালে এমন সুবিধা পেয়ে অনেকটা স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন তাঁদের বাড়ির লোকজনও। হাসপাতালে আসা রোগীর আত্মীয় পরিজনদের অনেকেই বলছেন, ‘‘কলকাতায় সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে হাসপাতাল পরিষেবা বেশ উন্নত। কিন্তু করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর তালিকায় প্রায়শই শীর্ষে চলে যাওয়া উত্তর ২৪ পরগনা খানিকটা পিছিয়ে। তাই এমন একটা ওয়ার্ড খুব প্রয়োজন ছিল।’’ বারাসতেরই বাসিন্দা কাজল ভট্টাচার্য যেমন বললেন, ‘‘এমন সুবিধা পেলে রোগীর আত্মীয়দের আতঙ্ক অর্ধেক কমে যাবে।’’