লালবাজার।—ফাইল চিত্র।
প্রায় দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও সন্ধান মেলেনি আলিপুরদুয়ারের নিখোঁজ তরুণীর। কলকাতা থেকে আচমকা কোথায় উধাও হয়ে গেলেন তিনি, তার ব্যাখ্যা নেই পুলিশের কাছে। তবে লালবাজার জানিয়েছে, তরুণীর নিখোঁজ রহস্যের তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ারের ওই তরুণী এক নামী ফ্যাশন ডিজ়াইনারের সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁর অফিস পার্ক সার্কাস এলাকায়। চিৎপুর থানা এলাকার একটি বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতেন তিনি। ওই বাড়িতেই আলাদা একটি ঘরে থাকেন তাঁর বোনও। তিনিও একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। গত ১১ জানুয়ারি রাতে নিখোঁজ হয়ে যান ওই তরুণী। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, নিখোঁজ হওয়ার কিছু দিন আগে থেকেই অন্যমনস্ক থাকতেন ওই তরুণী। ৮ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার জন্য বেরোলেও তিনি সেখানে যাননি। ১১ জানুয়ারি বাড়ি ফিরে মা ও বোনকে জরুরি কথা বলবেন বলেও জানিয়েছিলেন।
পুলিশ তদন্তে নেমে ওই তরুণীর মোবাইল ফোনের টাওয়ারের অবস্থান খতিয়ে দেখে জানতে পেরেছে, ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তিনি ধর্মতলা এলাকায় ছিলেন। শেষ বার ইন্টারনেট ব্যবহার করেছিলেন পার্ক সার্কাস এলাকায়। তবে ধর্মতলা ও পার্ক সার্কাস এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ওই তরুণীকে দেখতে পাননি তদন্তকারীরা। ওই ফুটেজ তাঁর বোনকেও দেখানো হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ওই তরুণীর পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। তাঁর পরিবার ও পরিজনদের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারীরা। লালবাজারের খবর, চিৎপুর থানা ওই তরুণীর নিখোঁজ রহস্যে তিন জনের একটি দল তৈরি করেছে। মিসিং পার্সনস স্কোয়াড এবং গুন্ডা দমন শাখাও তরুণীর খোঁজ করছে।
আলিপুরদুয়ারের বাড়িতে বসে ওই তরুণীর মা জানান, সারা দিনে বেশ কয়েক বার দুই মেয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হত। সম্প্রতি বড় মেয়ে কাজের চাপের কথা বলতেন। গত ডিসেম্বরে তাঁরা দার্জিলিং গিয়েছিলেন। তার পরে আলিপুরদুয়ারের বাড়িতে কয়েক দিন ছিলেন ওই তরুণী। ডুয়ার্স উৎসবেও ঘুরেছেন। জানুয়ারির প্রথম দিকে কলকাতায় ফিরে আসেন ওই তরুণী। তার পরেই এই অঘটন।
ওই তরুণী কোথায় যেতে পারেন, সে ব্যাপারে এখনও তারা অন্ধকারে, জানিয়েছে তাঁর পরিবার। ১২ জানুয়ারি ওই তরুণীর ছোট বোন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তার পর থেকে প্রায় দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও পুলিশও অন্ধকারে কেন— সেই প্রশ্নও তুলেছেন ওই তরুণীর বাড়ির লোকজন।