ফাইল চিত্র।
কড়া নিরাপত্তার বলয় পেরিয়ে এক ব্যক্তি কী ভাবে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ভিতরে ঢুকে সারা রাত সেখানে বসেছিল, সেই রহস্যের নিঃসংশয় সমাধান হয়নি এখনও। সুরক্ষায় ছিদ্র থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের পাশাপাশি এ বার নিরাপত্তারক্ষীদের মনোভাবেও বদল আনতে চাইছে পুলিশ-প্রশাসন।
পুলিশকর্তাদের অভিমত, রক্ষীরা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে ঠিকমতো ওয়াকিবহাল না-থাকলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক তৈরি হতে পারে। তাই এ বার থেকে যে-সব পুলিশকর্মী মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে আগে বিশেষ ‘ক্লাস’ নেওয়া হবে। পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, ‘ক্লাস’ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তুলনায় কম বয়সি পুলিশকর্মীদেরই এই ধরনের দায়িত্বে মোতায়েন করার চেষ্টা চলছে। কারণ, অল্পবয়সিরা আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্রুত শিখে নিতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কিছু দিন আগেই এক যুবক যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল। শুধু তা-ই নয়, নিরাপত্তাপক্ষীদের নজর এড়িয়ে রাতভর সেখানে বসেও ছিল সে। পরে জানা যায়, আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি এবং তার আশপাশের এলাকা সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য জেনে নিয়ে ওই যুবক নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে সেখানে ঢুকে পড়েছিল। সেই ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ডিরেক্টর সিকিয়োরিটি-সহ কিছু পুলিশকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এখন যৌথ ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা দেখভাল করেন ডিরেক্টর সিকিয়োরিটি এবং কলকাতা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি সংলগ্ন এলাকার নিরাপত্তা দেখেন ডিরেক্টর সিকিয়োরিটি। বাড়ির বাইরের গোটা এলাকার নিরাপত্তা দেখভাল করে কলকাতা পুলিশ। রোজ অন্তত ২০০ পুলিশকর্মীকে ওই এলাকার সুরক্ষায় মোতায়েন করা হয়ে থাকে।
এক পুলিশকর্তা জানান, যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সুরক্ষা দেখভাল করার মতো ডিউটিতে থাকছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে থাকে তাঁদের মনোভাবের উপরে। সেই সব রক্ষী যাতে ওই নিরাপত্তার গুরুত্ব সম্যক বুঝতে পারেন এবং ডিউটির সময় কেউ যাতে অন্য কোনও দিকে নজর না-দেন, সেই জন্য তাঁদের বিশেষ ‘ব্রিফ’ করা হবে এবং বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পাড়ায় যাঁরা এ দিন প্রবেশ করেছেন, তাঁদের জন্য অস্থায়ী পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে পুলিশি সূত্রের খবর। বাইরের লোক কোনও কাজে ওই পাড়ায় যেতে চাইলেতার যথাযথ কারণ দেখানোর পরেই পাস দেওয়া হয়েছে। এ দিন অস্থায়ী ভাবে ওই পাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। এর আগেই মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ার বাসিন্দাদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এবং ‘স্মার্ট গেট’ বসানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় ঢোকার মুখেই।