বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
জি২০ সম্মেলন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ডাকা রাষ্ট্রনেতাদের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে ‘দ্য প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’-র বদলে ‘দ্য প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে কি দেশের নামবদলের ভাবনা? এ নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় নামবদল হলে আগামী দিনে লোকসভা ও বিধানসভার অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে বলে মন্তব্য করলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার বিধানসভায় জন্মাষ্টমীর এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানেই তাঁকে 'ইন্ডিয়া' থেকে 'ভারত'-এর নাম বির্তক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে বিমান বলেন, ‘‘আপনার সংবিধান পড়ে দেখবেন সেখানেই লেখা আছে ‘ভারত দ্যাট ইজ ইন্ডিয়া’। সুতরাং, ‘ইন্ডিয়া’ বলেই আমরা সারা বিশ্বে পরিচিত। হঠাৎ ‘ভারত’ নাম কেন করা হচ্ছে আমি জানি না। কী উদ্দেশ্যেই বা এটা করা হচ্ছে তাও আমরা জানি না।’’ এরপরেই স্পিকার বলেন, ‘‘আমরা আতঙ্কিত! যে ভাবে একের পর এক বিষয়ে পরিবর্তন আসছে তাতে ভবিষ্যতে সংবিধানের উপরে আঘাত হেনে আমাদের স্বাধীনতা বজায় থাকবে কি না! বিধানসভা ও লোকসভার কী মর্যাদা থাকবে সেটা নিয়েও আমরা সন্দিহান।’’ এর পরেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে কী বিধানসভার অস্বস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম অফ গভর্নমেন্ট’ হবে কি হবে না, অনেক আলোচনা, অনেক পর্যালোচনা হচ্ছে। যেমন ভাবে এক দেশ এক ভোট।’’ এ ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন বিধানসভার স্পিকারদের এগিয়ে আসতে বলেছেন বিমান। তাঁর কথায়, ‘‘সময় এসেছে সারা ভারতের স্পিকারদের আবার পর্যালোচনা করার। পার্লামেন্টের গণতান্ত্রিক যে মূল্য তা আমরা বজায় রাখতে পারছি কি না।’’
উল্লেখ্য, এই সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেছেন, ‘‘আজকে তো ইন্ডিয়ার নাম চেঞ্জ করে দিচ্ছে বলে আমি শুনলাম। মাননীয় রাষ্ট্রপতির নামে যে কার্ড হয়েছে, জি২০-র লাঞ্চে না ডিনারে, তাতে লেখা আছে ভারত বলে। আরে ভারত তো আমরা বলি। এতে নতুনত্ব কী আছে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ইংরিজিতে বলি ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়ান কনস্টিটিউশন। হিন্দিতে বলে ভারত কা সংবিধান। ভারত তো আমরাও বলি, ভারত আমার ভারতবর্ষ স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো। এতে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু ইন্ডিয়া নামে সারা বিশ্ব চেনে। হঠাৎ এমন কী হল?’’