আনন্দে আস্থা বিমানের। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দিনহাটায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের উপর হামলার ঘটনায় কড়া বিবৃতি জারি করে শাসকদল তৃণমূলের রোষানলে পড়েছেন রাজ্যপাল। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল সংবিধান মেনে কাজ করছেন বলে মন্তব্য করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ রাজ্যপালের সমালোচনা করার পরেও রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন না স্পিকার। স্পিকার বলেন, ‘‘রাজ্যপাল রাজ্যপালের মতো আছেন। আমি তাঁর মধ্যে কোনও ব্যতিক্রম বা পরিবর্তন দেখছি না।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল সংবিধান মেনেই কাজ করছেন। সংবিধান মেনেই তাঁর কাজ করার কথা। আমাদের সঙ্গে রাজ্যপালের বিরোধের কোনও জায়গা নেই। বিধানসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে তেমন কিছুই দেখিনি।’’
জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন স্পিকারের সঙ্গে তাঁর সংঘাত হয়েছিল। সেই সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে সারা ভারত স্পিকার সম্মেলনে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছিলেন তিনি। বিধানসভা পরিচালনার কাজে রাজ্যপাল ধনখড় হস্তক্ষেপ করছেন বলেই অভিযোগ করেছিলেন বিমান। এমনকি, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপনির্বাচনে জয়ী হলে অধিকার বলে বিধানসভায় এসে তাঁকে বিধায়কের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন ধনখড়। তা ছাড়া বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয় জিতলে তাঁর শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব ধনখড় দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
কিন্তু গত বছর নভেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্বে আসার পর থেকে বিধানসভার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রেখে চলেছেন আনন্দ। বিধানসভায় আটকে থাকা বিলগুলি নিয়ে কিছুটা নরম মনোভাব নিয়েছেন তিনি। তাই ধনখড়ের তুলনায় আনন্দের সঙ্গে স্পিকারের সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল বলেই মনে করছেন অনেকে। বিমান বলেছেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে রাজ্যপালের কোনও বিরোধ নেই। বিধানসভার কাজ বাদ দিয়ে তো আলোচনার জায়গা নেই। তাই কোনও বিরোধও নেই।’’ তবে রাজভবনে বিল আটকে থাকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অনেক বিল পাঠিয়েছি। রাজ্যপালের উচিত বিলগুলি ছেড়ে দেওয়া। দেশের সব জায়গায় বিধানসভায় বিতর্ক আছে। আমার মনে হয়, রাজ্যপালের কাছে যে বিল যাচ্ছে, সেটার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত।’’
তবে নিশীথের উপর আক্রমণের ঘটনায় রাজ্যপালের রিপোর্ট তলব করার ঘটনাকেও সমর্থনই করেছেন স্পিকার। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাতেই পারেন।’’