(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
জোড়া বিধায়কের শপথগ্রহণ ঘিরে কম দড়ি টানাটানি হয়নি রাজভবন এবং বিধানসভার মধ্যে। সদ্যসমাপ্ত চার বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেও কি আবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে? তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে। সোমবার বিধানসভায় এসেছিলেন রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী। স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেই বিধানসভায় এসেছিলেন তিনি। এই সাক্ষাতের পর স্পিকারকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘জয়ী প্রার্থী আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শংসাপত্র দেখিয়ে গেলেন। নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠের কী ব্যবস্থা হবে?’’
জবাবে বিমান বলেন, ‘‘শপথ তো হতেই হবে। আমাদের রাজ্যের পরিষদীয় দফতর রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এটা তাদের কর্তব্য। রাজ্যপালের যেটা কন্সটিটিউশনাল কনভেনশন, যা নিয়ে আগে এত বিতর্ক হয়েছিল, তা ফলো করে যদি তিনি স্পিকারকে দায়িত্ব দেন, তা হলে আমিই শপথবাক্য পাঠ করিয়ে দিতে পারি। তা না হলে আধিবেশন শুরু হলে, ফার্স্ট আইটেম হিসাবে আগের বারের মতো শপথ করিয়ে দেব।’’
প্রসঙ্গত, গত ৪ জুন লোকসভা ভোটের সঙ্গেই ফলঘোষণা হয় বরাহনগর ও ভগবানগোলা উপনির্বাচনের। বরাহনগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার জয় পান। তাঁদের চিঠি দিয়ে রাজভবনে শপথবাক্য পাঠ করার আমন্ত্রণ জানান রাজ্যপাল। কিন্তু সেই ডাকে সাড়া না দিয়ে বিধানসভাতেই স্পিকারের কাছে শপথগ্রহণের দাবিতে ধর্না শুরু করেন সায়ন্তিকা-রেয়াত। শেষমেশ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে এড়িয়েই এক দিনের অধিবেশন ডেকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন স্পিকার বিমান।
আর শনিবার রাজ্যের চারটি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলে মানিকতলায় সুপ্তি পাণ্ডে, বাগদায় মধুপর্ণা ঠাকুর, রানাঘাট দক্ষিণে মুকুটমণি অধিকারী এবং রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যাণী জয়ী হয়েছেন। শাসকদলের লক্ষ্য, যত দ্রুত সম্ভব জয়ী প্রার্থীদের শপথগ্রহণ করিয়ে এলাকার উন্নয়নের কাজে তাঁদের শামিল করা। বিমান বলেন, ‘‘পরিষদীয় দফতর থেকে রাজ্যপালের কাছে চিঠি যাক। সেই চিঠি দেখে রাজ্যপাল কী জবাব দেন, তা দেখতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উপনির্বাচনে যাঁরা জয়লাভ করে আসবেন, তাঁদের শপথবাক্য স্পিকার পাঠ করাবেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হওয়ার কোনও কারণ নেই। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রাজ্যপাল অন্য রকম ভাবে চিন্তাভাবনা করেছিলেন। পরিষদীয় দফতর থেকে ওঁর কাছে চিঠি যাবে, তার পর উনি সিদ্ধান্ত নেবেন কী করবেন।’’
২২ জুলাই বিধানসভার অধিবেশন শুরু। প্রথম দিন শোকপ্রস্তাবের পর অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে ২৩ জুলাই নবনির্বাচিত চার বিধায়কের শপথ গ্রহণ করাবেন বলে জানিয়েছেন স্পিকার।