BJP

বেজায় ক্ষুব্ধ শোভন, দিলীপ-মেননের কাছে অভিযোগ জয়প্রকাশের বিরুদ্ধে

দেবশ্রীকে নিয়ে আসলে শোভনের কোনও আপত্তি নেই, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ই আসল বাধাটা দিচ্ছেন— এমন দাবিও জয়প্রকাশ করেন।

Advertisement

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:০১
Share:

জয়প্রকাশ মজুমদারের বিরুদ্ধে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানালেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

লাগাতার চাপান-উতোর গড়িয়ে গেল নেতৃত্বের কোর্টে। জয়প্রকাশ মজুমদারের বিরুদ্ধে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানালেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। প্রাক্তন মেয়রের অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। একনাগাড়ে চলতে থাকা বিতর্কে হস্তক্ষেপ করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন।

Advertisement

১৪ অগস্ট বিজেপিতে যোগ দেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে যোগ দেন শিক্ষাবিদ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়ও সে দিন বিজেপি সদর দফতরে হাজির হয়েছিলেন, সে দলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এবং সেই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক এখনও অব্যাহত।

দেবশ্রী রায়কে বিজেপিতে স্বাগত জানানোয় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আপত্তি ছিল। সেই কারণেই দেবশ্রীর যোগদান আটকে যায়। পরে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষও জানিয়েছেন যে, দেবশ্রীর বিষয়ে বিজেপিতে সকলে এখনও একমত নন, তাই দেবশ্রীকে দলে স্বাগত জানানোর সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন: অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি আইসিসিইউ-তে

কিন্তু বিতর্ক তাতে থেমে থাকেনি। স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠেছে যে, শোভনদের যোগদানের দিনেই দেবশ্রী কেন বিজেপি সদর দফতরে হাজির হলেন? প্রশ্ন উঠেছে যে, দেবশ্রীকে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার নেপথ্যে কে ছিলেন? শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্য বিজেপির অন্যতম সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারই দেবশ্রীকে যোগাযোগ করিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে।

জয়প্রকাশ আবার পাল্টা দোষ চাপিয়ে দেন শোভনের উপরেই। কেন তাঁর দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না, বরং দেবশ্রী রায়কে বিজেপি সদর দফতরে দেখে প্রথমে শোভনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন বৈশাখী— এমনই বলেন রাজ্য বিজেপির ওই সহ-সভাপতি। দেবশ্রীকে নিয়ে আসলে শোভনের কোনও আপত্তি নেই, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ই আসল বাধাটা দিচ্ছেন— এমন দাবিও জয়প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন: নামখানা লোকালে টলি-অভিনেত্রীর যৌন হেনস্থা, গ্রেফতার আরপিএফ

জয়প্রকাশের এই দাবির তীব্র বিরোধিতা করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। দেবশ্রী রায়ের বিষয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই, আসল আপত্তি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের— এই তত্ত্ব সম্পূর্ণ নস্যাৎ করেন শোভন। পুরোপুরি ভিত্তিহীন তত্ত্ব খাড়া করে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বিতর্কে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে প্রাক্তন মেয়র দাবি করেন। গত কয়েক সপ্তাহে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে জয়প্রকাশ মজুমদার একের পর এক ভিত্তিহীন কথা রটাচ্ছেন বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন।

এই চাপান-উতোর কিছুতেই থামছিল না। শুক্রবারও দেবশ্রী পর্ব নিয়ে জয়প্রকাশের কিছু মন্তব্য ভেসে ওঠে সংবাদমাধ্যমে। সে মন্তব্যে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হন শোভন। তিনি রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ফোন করে জয়প্রকাশ মজুদারের নামে অভিযোগ করেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননের কাছেও অভিযোগ জানান।

আনন্দবাজারকে শোভন বলেছেন, ‘‘অনবরত অপপ্রচার করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলা হচ্ছে এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা বলা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমি রাজ্য নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’

বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ শুক্রবার কলকাতার বাইরে ছিলেন। আনন্দবাজারকে তিনি ফোনে জানান যে, জয়প্রকাশ মজুমদারের বিরুদ্ধে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘‘শোভনবাবু ফোন করেছিলেন। নানা রকম অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলা হচ্ছে বলে তিনি আমাকে জানিয়েছেন। কে কী বলেছেন, আমি খোঁজ নিচ্ছি। যদি খারাপ কিছু ঘটে থাকে বন্ধ করার চেষ্টা করব।’’

এ বিষয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘কে কী অভিযোগ করেছেন, আমি জানি না। যা জানি না, তা নিয়ে মন্তব্য করব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement