দক্ষিণের কড়চা

এ এক অন্য রকম জয়! ওদের প্রতিপক্ষ কুসংস্কার। মৃত মানুষের চোখ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করাই ওদের কাজ। সেই কাজে গোটা রাজ্যে টানা সাত বছর ধরে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হয়ে আসছে হুগলির শ্রীরামপুর সেবাকেন্দ্র ও চক্ষুব্যাঙ্ক।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৬ ০১:৪৩
Share:

মরণোত্তর কর্নিয়া সংগ্রহে সেরার ট্রফি

Advertisement

এ এক অন্য রকম জয়!

ওদের প্রতিপক্ষ কুসংস্কার। মৃত মানুষের চোখ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করাই ওদের কাজ। সেই কাজে গোটা রাজ্যে টানা সাত বছর ধরে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হয়ে আসছে হুগলির শ্রীরামপুর সেবাকেন্দ্র ও চক্ষুব্যাঙ্ক। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা রাজ্যে কর্নিয়া সংগ্রহের কাজে এখনও এক নম্বরে রয়েছে শ্রীরামপুরের এই সংগঠনটি। স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি তাদের হাতে মানপত্র এবং ট্রফি তুলে দিয়েছে মরণোত্তর কর্নিয়া সংগ্রহ নিয়ে কাজ করা কলকাতার একটি নামী সংগঠন। চক্ষুদান আন্দোলনে রাজ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাদের লক্ষ্য। গত কয়েক দশক ধরে শ্রীরামপুর সেবাকেন্দ্র ও চক্ষুব্যাঙ্কের সদস্যরা মরণোত্তর কর্নিয়া সংগ্রহের কাজ করে চলেছেন। কখনও মিছিল, কখনও সভা, কখনও শ্মশানযাত্রীদের বোঝানোর মাধ্যমে চক্ষুদান আন্দোলনে সামিল এই সংগঠনের সদস্যরা। মৃতের প্রিয়জনদের খুঁজে মৃতের চোখের কর্নিয়া দান করার আবেদন জানান তাঁরা। সংগঠনের সদস্যরা জানান, ২০১৫ সালে ২২২ জোড়া অর্থাৎ ৪৪৪টি কর্ণিয়া সংগ্রহ করতে পেরেছে এই সংগঠন। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত তাঁদের মাধ্যমে ১১০ জোড়া অর্থাৎ ২২০টি কর্ণিয়া সংগৃহীত হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে এ দেশে ৩০ লক্ষের বেশি মানুষ কর্নিয়াজনিত সমস্যায় ভুগছেন। সারা দেশে বছরে ৮০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই কারণে মারা যান। কিন্তু বছর পিছু সারা দেশে ৪০-৪৫ হাজারের বেশি মরণোত্তর কর্নিয়া সংগ্রহ হয় না। কারণ, মৃত্যুর পরে কর্ণিয়া দান ‌নিয়ে এখনও সে ভাবে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। অজ্ঞতা এবং কুসংস্কারের কারণেই মৃতের চোখ দিতে চান না পরিজনেরা। এই পরিস্থিতিতে লড়াই করে নিজেদের ‘চ্যাম্পিয়ন’ তকমা ধরে রাখতে চান সেবাকেন্দ্রের সদস্যেরা।

Advertisement

কিঙ্করের ভাণ্ডারী

জন্মেছেন বাঁকুড়ার যুগীপাড়া। বিখ্যাত হয়েছিলেন শান্তিনিকেতনে। কিন্তু বাঁকুড়াকে ভোলেননি শিল্পী রামকিঙ্কর! সুযোগ পেলেই ছুটে আসতেন বাঁকুড়ায়। আড্ডা মারতেন পুরনো বন্ধু বিশ্বনাথ নন্দি, অতুল কুচল্যানদের সঙ্গে। একবারের কথা। এসে বন্ধুদের মুখে শুনলেন, দোতলায় এক ছোকরা গান-বাজনায় মেতে আছে। শুনেই বন্ধুদের নিয়ে সটান হাজির হলেন সেই ছোকরার বাড়ি। সে দিনের সেই ছোকরা আজকের অশীতিপর বাসুদেব চন্দ্র। আবাল্য তাঁর ছবি আঁকার নেশা। কিঙ্করকে সেদিন বাড়িতে পেয়ে, হাতে যেন স্বর্গ পেল। এরপরে যখনই রামকিঙ্কর বাঁকুড়া আসতেন, বাসুদেববাবু তাঁর ভিটেতে হাজির হতেন। কিঙ্করও অনেকবার এসেছেন তাঁর বাড়িতে। শিল্প বিষয়ে নানা জিজ্ঞাসার সঙ্গে সঙ্গে রামকিঙ্করের গাওয়া অনেক রবীন্দ্রসঙ্গীতও রেকর্ড করেছিলেন তিনি। বলেন, ‘‘দোলতলায় লালুর যে চায়ের দোকান ছিল, সেখানে এসে বসতেন। পরনে থাকত পাজামা, আর গায়ে গেরুয়া পঞ্জাবি, মুখে চুরুট।’’ ফটোগ্রাফির নেশা ছিল বাসুদেববাবুর। ক্লাস এইটে পড়ার সময় বক্স ক্যামেরা নিয়ে শান্তিনিকেতন গিয়েছিলেন। কিন্তু ভয়ে রামকিঙ্করের ছবি তুলতে পারেননি। পরে রামকিঙ্করের অনেক ছবি তুলেছেন। প্রদর্শনীও করেছেন। রামকিঙ্করকে নিয়ে নানা পত্র-পত্রিকায় লেখালিখিও করেছেন। তাঁর লেখা পড়ে সাহিত্যিক সমরেশ বসু লিখেছেন, ‘‘ওঁর অগাধ শ্রদ্ধা জড়িত লেখা পড়ে মনে হচ্ছে, এখনই বাঁকুড়ায় ছুটে যাই। ছুটে গিয়ে দেখে আসি। বাসিদেববাবুর লেখা থেকে আমি নিঃশ্চয়ই লাভবান হয়েছি। তার পরিমান যতোটুকুই হোক।’’ বাসুদেববাবু বাঁকুড়ায় রামকিঙ্কর বিষয়ক এক জীবন্ত তথ্যভাণ্ডার।

‘যুগের’ নতুন নাটক

উপলক্ষ ছিল রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণ। সেই মঞ্চেই পরিবেশিত হল মাকড়দহ যুগ থিয়েটারের নতুন নাটক মনোজ মিত্রের লেখা ‘সত্যি ভূতের গল্পে’র প্রথম শো। ডোমজুড় ব্লকের এই নাট্যদলটি ২০১২ সাল থেকে নাট্যচর্চা করছে। সম্প্রতি হাওড়ার মাকড়দহ বাজারের বাণিজ্যিক ভবনের তিন তলায় সংগঠনের নিজস্ব সভাগৃহে অনুষ্ঠানটি হয়। সকালে প্রভাতফেরি, দুপুরে বসে আঁকো, বিকেলে প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতার পরে সন্ধ্যায় হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। খুদেদের নাচ, গান, কবিতা, পুরস্কার বিতরণীর পরে হয় নাটক। উপস্থিত ছিলেন মাকড়দহ ১ পঞ্চায়েতের প্রধান অর্পণা মুখোপাধ্যায়, হুগলির উত্তরপাড়া থানার আইসি মধূসূদন মুখোপাধ্যায়। মাকড়দহের নতুনপাড়া, হাওড়া পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের উনসানি কাছারিপাড়া-সহ গ্রামীণ হাওড়ার অন্যান্য এলাকাতেও স্থানীয় গ্রামবাসীদের উদ্যোগে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালিত হয়েছে।

নজরুলের গ্রামে

কাজি নজরুল ইসলামের জন্মভিটে চুরুলিয়ায় কবির জন্ম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সাত দিনের মেলা শেষ হয়েছে ৩১ মে। প্রতিদিনই রাতভর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। প্রথম দিন নজরুল, দ্বিতীয় দিন রবীন্দ্র, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম দিন যথাক্রমে প্রমীলা, ভগিনী নিবেদিতা, সম্প্রীতি ও শেষ দু’দিন লোকসংস্কৃতি দিবস হিসাবে নামাঙ্কিত করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ও চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ থেকে এসে গান শোনান এমএ মান্নান এবং নজরুলগীতি শিল্পী ফিরোজা বেগমের ভাইজি সুস্মিতা আনিস। অসম থেকে এসেছিলেন গীটারবাদক নীলোৎপল বরা। থাঙ্কমনি নিজে না এলেও তাঁর দল নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পাদক মজাহার হোসেন জানান, এ বছর থাঙ্কোমনিকে ‘নজরুল পুরস্কার’ প্রাপক হিসেবে মনোনিত করা

বসিরহাটে রবীন্দ্র স্মরণ

রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পালন করলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সমিতির সদস্যরা। সম্প্রতি বসিরহাটের রঘুনাথপুর স্কুলে এই অনুষ্ঠান হয়। উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক অরবিন্দ সেন-সহ অনেকে। এলাকার কয়েকশো পড়ুয়া কবিতা, গান এবং নাচ পরিবেশন করে। অন্য দিকে, অসুস্থ শিশুর চিকিৎসার জন্য বসিরহাট রবীন্দ্রভবনে সান্ধ্যকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করল স্থানীয় স্পন্দন নৃত্যকলা কেন্দ্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement