—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্যে পুর নিয়োগেও দু্র্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সিবিআইয়ের দাবি, এর মধ্যে দক্ষিণ দমদম পুরসভায় ২৯ জন জনের চাকরিতে অনিয়ম হয়েছে। ওই ২৯ জনের নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন ফাইল হাতে এসেছে সিবিআইয়ের। তারই একটিতে দেখা গিয়েছে, কত নম্বরের ভিত্তিতে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ফাইল অনুযায়ী, ২৯ জনের মধ্যে মজদুর পদে চাকরি পাওয়া ২৭ জনেরই প্রাপ্ত নম্বর এক। পিয়ন পদে চাকরি পাওয়া বাকি দু’জনেরও প্রাপ্ত নম্বর এক। পরবর্তী কালে একটি সরকারি দফতরে তল্লাশি চালিয়ে এই নিয়োগ সংক্রান্ত আরও কিছু ফাইল উদ্ধার করে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, ওই ফাইলে ২৯ জনের প্রাপ্ত নম্বর যা দেখানো হয়েছে, তার সঙ্গে যে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তার কোনও মিল নেই।
সিবিআইয়ের দাবি, দক্ষিণ দমদম পুরসভায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ২৯ জনের চাকরি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৭ জন মজদুর হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন। দু’জন পিয়ন হিসাবে চাকরি পেয়েছেন। ২৭ মজদুরই নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় পেয়েছেন ৫৫। মৌখিক পরীক্ষায় পেয়েছেন শূন্য। দু’জন পিয়ন নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় পেয়েছেন ৭৫। মৌখিক পরীক্ষায় পেয়েছেন শূন্য।
তদন্তে নেমে ডিরেক্টর অব লোকাল বডি (ডিএলবি)-র দফতরে তল্লাশি চালায় সিবিআই। নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে রয়েছে এই ডিএলবি। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআইয়ের হাতে আরও কিছু ফাইল এসেছে। ওই ফাইলে দক্ষিণ দমদম পুরসভায় চাকরি পাওয়া ২৯ জনের মধ্যে পাঁচ জনের নিয়োগ পরীক্ষার নম্বরের তথ্য মিলেছে। বাকিদের মেলেনি। ওই ফাইলে দেখা গিয়েছে, পাঁচ জনের মধ্যে এক জন মোট ৩৯ (৩০+৯), এক জন ৪৪ (৩৮+৬), এক জনের ৪৩ (৩৬+৭), এক জনের ৪২ (৩৩+৯), এক জন ৩৪ (২৮+৬) নম্বর পেয়েছেন। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই নম্বর লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের যোগফল।
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ (এসএসসি)-র পরীক্ষায় দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে সিবিআই। তারা ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) উদ্ধার করেছে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক জন প্রার্থী ওএমআর শিটে শূন্য পেয়েও চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। পুরসভার নিয়োগ দু্র্নীতির তদন্তে নেমে সিবিআই দাবি করেছে, দক্ষিণ দমদম পুরসভায় কয়েক জন চাকরি যখন পেয়েছেন, তখন দেখা গিয়েছে, তাঁরা ৫৫ পেয়েছেন। অন্য ফাইল যখন মিলছে, তখন দেখা যাচ্ছে তাতে কম নম্বর রয়েছে ওই প্রার্থীদের।
১ জুলাই আলিপুর আদালতে পুরনিয়োগ দুর্নীতিতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। সেখানে নাম রয়েছে অয়ন শীলের। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অয়নকে গ্রেফতার করে ইডি। পরে পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলা প্রকাশ্যে আসে। ইডি সূত্রে জানা যায়, অয়নের সংস্থাই পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআরের দায়িত্বে ছিল। চলতি বছর এপ্রিলে তাঁকে হেফাজতে নেয় সিবিআই। আদালতে সিবিআই জানিয়েছিল, পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তারা ৪২টি জায়গায় অভিযান (রেড) চালিয়েছে। সেখান থেকে প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই নথির বিষয়ে বিশদে জানতে অয়নকে জেরার প্রয়োজন। সিবিআইয়ের দাবি, অয়নের সংস্থার মাধ্যমে ১,৮২৯ জনের বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগ হয়েছিল। সিবিআই সূত্রের খবর, যাঁদের মধ্যে ৯০ শতাংশের নিয়োগ নিয়ম না মেনেই হয়েছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বহু প্রার্থীকে ডেকে জেরা করেছে। ১৭টি পুরসভায় অয়নের মাধ্যমে চাকরি হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।