বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। নিজস্ব চিত্র।
তৃতীয় বার সরকার গঠনের পরেই একের পর এক অরাজনৈতিক সংগঠন থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সরানোর কাজ শুরু করেছে তৃণমূল। এ বার ঐতিহাসিক তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরানো হল। তমলুকের এই জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি পদে শুভেন্দুর বদলে আনা হল রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে। তিনি আবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি হওয়ার পাশাপাশি, তমলুকের বিধায়কও বটে। উল্লেখ্য, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের নিমতৌড়িতে রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সংগ্রামীদের স্মৃতিবিজড়িত এই জনকল্যাণ সমিতি। ২০০৯ সালে প্রথম বারের জন্য তমলুকের সাংসদ হন শুভেন্দু। তার পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নানা সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করেন তিনি।
সেই পর্যায়েই তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির সভাপতির পদে একটানা ন'বছর ছিলেন শুভেন্দু। ২০১২ সালে প্রথম বার জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন। ২০১২ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত সভাপতির পদেই ছিলেন তিনি। এ বার তাঁকে সরিয়ে সৌমেন দায়িত্ব নেওয়ার পর জানানো হয়েছে, নতুন কমিটির মেয়াদ থাকে তিন বছর। তাই সভাপতি পদেও আগামী তিন বছর থাকবেন সেচমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, গত ৬ জুলাই এ বারের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। শুভেন্দুর অনুপস্থিতিতেই শনিবার কমিটির সদস্যরা বৈঠক করে নতুন সভাপতি নির্বাচন করেন।
সেই সভায় নতুন সভাপতি হিসেবে সৌমেনের নাম প্রস্তাব করেন সমিতির কোষাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা। সমর্থন করেন সহ-সম্পাদক দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। আগামী সাত দিনের মধ্যে নতুন কমিটি গঠন হবে বলে জানিয়েছেন নতুন সভাপতি সৌমেন। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পশ্চিমবঙ্গ সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্ট থেকেও বিরোধী দলনেতাকে ছেঁটে দায়িত্ব পেয়েছেন সেচমন্ত্রীই। প্রসঙ্গত, তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির জন্ম হয়েছিল মহাত্মা গাঁধীর আদর্শকে সামনে রেখে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সুশীল ধাড়া, সতীশ সামন্ত ও অজয় মুখোপাধ্যায়রা গাঁধীর আদর্শকে মাথায় রেখেই এই সংগঠনের মাধ্যমে সমাজকল্যাণমূলক কাজ করতেন। তাঁদের নেতৃত্বেই একসময় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে গঠিত হয়েছিল তাম্রলিপ্ত সরকার। তাই মেদিনীপুর জেলার মানুষের কাছে এই সংগঠনের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই গত ১০ বছর শুভেন্দুর নেতৃত্বেই কাজ করেছিল সংগঠনটি। কিন্তু বাংলার শাসক দল এ বার সংগঠনের দায়িত্ব মন্ত্রী সৌমেন মারফত নিজেদের কাঁধে তুলে নিল বলেই মনে করা হচ্ছে।