NEET

NEET: দিনমজুরের ছেলের গলায় ঝুলবে স্টেথোস্কোপ

অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, কলকাতার নামি মেডিক্যাল কলেজেই ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাবে উজ্জ্বল শেখ।

Advertisement

মফিদুল ইসলাম

নওদা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২১ ০৭:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিনমজুরের ছেলে উজ্জ্বলের গলায় ঝুলবে স্টেথোস্কোপ। আনন্দে মাতোয়ারা নওদার প্রত্যন্ত গ্রাম বটকনাথপুর গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের ছেলে উজ্জ্বল শেখ এ বছর সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ নজরকাড়া ফল করেছেন। ৭২০-র মধ্যে ৬৩৯ পেয়ে তাঁর সর্বভারতীয় স্থান ৬২১৫। তাঁর শতকরা স্কোর ৯৯.৫৯।

অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান উজ্জ্বল। তাঁর বাবা সেন্টু শেখ পেশায় দিনমজুর। মা উজিলা বিবি গৃহবধূ। তিন ভাইবোনের মধ্যে উজ্জ্বল বড়। ২০১৭ সালে স্থানীয় সরযূবালা হাইস্কুল থেকে ৫৯১ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বিশ্বাস বলছেন, ‘‘উজ্জ্বল বরাবরই পড়াশোনায় ভাল। তবে তাঁর এই সাফল্য দারিদ্রকে হারিয়ে দিয়েছে। ওর জন্য আমরা গর্বিত।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উজ্জ্বলের ছোট ভাই সূরজ বেঙ্গালুরুতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। দাদা মেধাবী বলে দাদার পড়াশোনার খরচ জোগাতে সূরজ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ বেছে নিয়েছেন। সূরজেরও আর খুশি ধরে না, দাদা একদিন ডাক্তার হবে। ছেলের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত উজ্জ্বলের মা উজিলা বিবি চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘‘ছেলেকে খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছি। পড়ার খরচ যোগাতে সেলাইয়ের কাজও শিখেছি। ছেলে ডাক্তার হবে জেনেই খুব ভাল লাগছে।’’ জানা গিয়েছে, ক্লাস টেনে পড়ার সময় তাঁর দাদু ক্যানসারে আক্রান্ত হন। কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা যান তিনি। তখন থেকেই চিকিৎসক হওয়ার জেদ চেপে ধরে উজ্জ্বলের।

Advertisement

পরিবারের লোকেরা বলছেন, আল আমিন মিশনে ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষার কোচিং নেওয়া শুরু করে সে। প্রবেশিকা পরীক্ষার ফল বেরোতেই উজ্জ্বলদের বাড়ির উঠোনে ভিড় করছেন এলাকার বাসিন্দারা। পরিবারের পাশে থাকারও আশ্বাস দেন তাঁরা।

অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, কলকাতার নামি মেডিক্যাল কলেজেই ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাবে সে। উজ্জ্বল বলেন, ‘‘স্কুলের শিক্ষক ও আবাসিক স্কুলের শিক্ষকদের অবদান ভোলার নয়।’’ যে সমস্ত মানুষ অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চান উজ্জ্বল। তাঁর বাবা সেন্টু বলেন, ‘‘নিজে লেখাপড়া জানি না। দিনমজুরি করে সংসার চালিয়ে ছেলেকে লেখাপড়া শেখাচ্ছি। ছোট ছেলে নিজের পড়াশোনা ছেড়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বার আমাদের সকলের স্বপ্নপূরণ করবে উজ্জ্বল।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement