গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রয়াত সোমেন মিত্রের জন্মদিনে কি দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতারা একই মঞ্চে জড়ো হতে চলেছেন? সে দিনের আমন্ত্রিতের তালিকা তো তেমনই বলছে। সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস— সব দলেরই ‘ওজনদার’ নেতারা রয়েছেন সেই তালিকায়। তেমন হলে আগামী বিধানসভা ভোটের আগে সম্ভবত এই প্রথম সকলকে একই মঞ্চে দেখতে পাওয়া যাবে। জনতা তাকিয়ে থাকবে এটা দেখার জন্যও যে, কারা ওই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং কারা এড়িয়ে যান।
জীবদ্দশায় সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই সোমেনের সম্পর্ক ভাল ছিল। গত ৩০ জুলাই তিনি প্রয়াত হন। বছর শেষে আবার সংবাদের শিরোনামে তিনি। আগামী ৩১ ডিসেম্বর তাঁর জন্মদিন। গত বছর পর্যন্ত দিনটি বাড়িতেই ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কাটাতেন প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। কিন্তু তাঁর প্রয়াণের পর প্রথম জন্মদিনটি মিত্র পরিবার প্রকাশ্যে পালন করেত চাইছে। একেবারেই পরিবারের তরফে বউবাজারে এক সামাজিক কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বঙ্গ রাজনীতির সব বড় কুশীলবকে। বুধবারই সোমেনপুত্র রোহন আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন সিপিএমের বিমান বসু, বিজেপি-র মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্ত এবং তৃণমূলের কুণাল ঘোষকে। বিমানকে আমন্ত্রণ জানাতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটেই গিয়েছিলেন রোহন। মুকুল ও সব্যসাচীকে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তাঁদের সল্টলেকের বাসভবনে গিয়ে। কুণালকেও তাঁর বাড়িতে গিয়েই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সোমেন-তনয়। আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকেও। প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আমন্ত্রণ পেয়েছেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। রোহন বলছেন, ‘‘শুভেন্দুদার সঙ্গে বাবার সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। বাবাকে ব্যক্তিগত ভাবেও খুব শ্রদ্ধা করতেন তিনি। তাই ওই কর্মসূচিতে মা তাঁকে আলাদা করে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’’ ওই দিন প্রয়াত সোমেনের নামাঙ্কিত একটি অ্যাম্বুল্যান্স এলাকাবাসীর জন্য উৎসর্গ করবেন সোমেন-জায়া শিখা মিত্র। ৫০০ জন দুঃস্থ মানুষকে কম্বলও দান করা হবে।
আরও পড়ুন: তরুণ প্রজন্মকে আরও কাছে চাই, নির্বাচনের আগে ‘দুয়ারে তারকা’
শুক্রবার রোহন বলেন, ‘‘বাবার সঙ্গে এঁদের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত ভাল সম্পর্ক ছিল। যে দিন তিনি মারা যান, সেদিন এঁরা সকলেই সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন। বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানেও অনেকে এসেছিলেন। তাই বাবার স্মরণে যে কর্মসূচি হচ্ছে, সেখানে এঁদের সকলকেই ব্যক্তিগতভাবে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’’
সাধারণ ভাবে এই কর্মসূচির মধ্যে রাজনীতি নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে কিছুদিন আগেই প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রোহন টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এবং আস্থার কথা জানিয়েছিলেন। সেই টুইট নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে খানিক চর্চা হলেও তার বেশি ঘটনা এখনও পর্যন্ত এগোয়নি।