পিকে।
এতদিন কেউ আঙুল তোলেননি। প্রশ্নও করেননি। তৃণমূলের অন্দরে টিম পিকে-র অবাধ কার্যপদ্ধতি নিয়ে এতদিন নীরবতাই পালন করে এসেছেন রাজ্যের তাবড় তাবড় নেতা। সেই নীরবতা ভাঙলেন দলের এক শ্রমিক নেতা। তিনি এবার সরাসরি প্রশ্ন তুললেন টিম পিকে-র ভূমিকা নিয়েই। এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তির হাওয়া নেতৃত্বে।
দলের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত পুরো খোলনলচেটাই টিম পিকে বদলে দিচ্ছে বলে একটা ধারণা রয়েছে শাসক তৃণমূলের অন্দরে। কিন্তু পুরভোটের আগে টিম পিকে-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা আলিজার রহমান। কোচবিহার জেলা আইএনটিটিইউসির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন আলিজার। কোচবিহারের মাথাভাঙার বাসিন্দা ওই নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘সংগঠনের জনবিচ্ছিন্ন এবং দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতেই কি টিম পিকে?’ আলিজারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, দলে যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই নেতারাই তৃণমূলের পতাকা হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, “টিম পিকে কাজ করছে বহুদিন ধরেই। তার পরেও ওই নেতারা কী করে দায়িত্বে থাকেন?”
তাঁর ওই বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কেই নানা মন্তব্য করা শুরু হয়েছে। প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছেন নেতৃত্বও। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “উনি ঠিক কী লিখেছেন আমি জানি না। তাঁর ব্যক্তিগত কোনও মতামত নিয়ে কিছু বলতে চাই না।” দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “কারও ব্যক্তিগত বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। ওই বক্তব্যের সঙ্গে দলের কোনও বিষয় নেই।” কিন্তু আলিজারের এই বক্তব্যে পুরভোটের মুখে হাতে বড় ‘অস্ত্র’ পেয়ে গিয়েছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূলে এখন যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই দুর্নীতিতে যুক্ত। তা সবাই কমবেশি জানে। টিম পিকে কেন আরও বড় কোনও এজেন্সি নিয়ে এলেও কাজ হবে না। তা তৃণমূলের লোকেরাই স্পষ্ট করে দিচ্ছে।”
লোকসভায় কোচবিহার কেন্দ্র হাতছাড়া হওয়ায় জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরানো হয় রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। দায়িত্ব দেওয়া হয় বিনয়কৃষ্ণকে। সে প্রসঙ্গ তুলেই আলিজারের প্রশ্ন, “রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল না। সাংগঠনিক কারণে তাঁকে সরানো হতে পারে। কিন্ত যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে, তাঁরা কীভাবে পার পাচ্ছেন?”
তিনি বলেন, “টিম পিকে দলের ভাল করতেই কাজ করছে। তার পরেও কেন সঠিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে না, তা নিয়েই আমার প্রশ্ন।”