কার্শিয়াঙে অনীত থাপার সভা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
বিমল গুরুঙ্গের ভয় মাথার উপরে রয়েছে। তাই ধীরে ধীরে বন্ধের মোড়ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েও ফের গুটিয়ে যাচ্ছে পাহাড়। তবে এর মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে কয়েকটি চা-বাগান। রবিবার অনীত থাপার সভামঞ্চ থেকে ঘোষণা করা হল, আজ, সোমবার থেকে ক্যাসেলটন, জংপনার মতো কয়েকটি বাগান খুলে যাবে।
টানা বন্ধে বিপুল ক্ষতির মুখে চা-বাগানগুলি। সেকেন্ড ফ্লাশের চা তোলাই সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় ক্যাসেলটন ও জংপনা খোলার খবরে অনেকেই আশার আলো দেখছেন। পাহাড়ের দোকানপাটও পুরোদমে খুলতে শুরু করলে পাহাড়বাসীর উপকারই হবে, মনে করছেন অনেকে। রাজ্যের সঙ্গে সর্বদল বৈঠকে গিয়েছিলেন শিরিং দাহাল। তিনিও এ দিন বলেন, ‘‘ঝাঁপ বন্ধ থাকলেও দোকান থেকে জিনিস মিলছে। স্কুল খুলেছে। চা-বাগান খুলছে। এমন বন্ধ চালানোর দরকার কী?’’ তাঁরা যে মুখ্যমন্ত্রীকে ত্রিপাক্ষিকের কথা বলেছেন, সেটাও উল্লেখ করেন তিনি।
পাহাড়ে রাজনৈতিক ভারসাম্য বদলে যাচ্ছে মনে করে রোজই গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল বা জিএলপি-র লোকজন বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপাদের দিকে চলে আসছেন, দাবি আলোচনাপন্থীদের। এ দিন এই সভার পরে কয়েক জন জিএলপি সদস্যকে নিয়ে অনীত বৈঠকও করেন।
পাহাড়বাসীদের বক্তব্য, বিমল গুরুঙ্গের জোরের জায়গা ছিল এই জিএলপি সদস্যরা। আন্দোলনে প্রথম দিকে তিনি যখন আত্মগোপন করেন, তখন তাঁকে ঘিরে থাকত ২৫ জনের একটি দল। তা ছাড়াও ইন্টারনেট-হীন পাহাড়ে যোগাযোগের কাজও করতেন জিএলপি সদস্যরাই। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, গুরুঙ্গের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বলয়ে ঘনিষ্ঠ অনুগামীর সংখ্যা আট-দশে নেমে এসেছে।
তাতেও অবশ্য দমছেন না গুরুঙ্গ। তিনি ‘অন্তিম লড়াই’ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন আবার। এ দিনও তাঁর সমর্থকেরা কার্শিয়াঙে একটি মিছিল করার চেষ্টা করে। পুলিশ অবশ্য তা হতে দেয়নি।
বিমল গুরুঙ্গপন্থীদের একাংশের কথায়, তাঁরা যে বন্ধ চাইছেন, তা নয়। তবে এত দিন ধরে যে বন্ধ চলল, তার তো কোনও ফল মেলা দরকার। তাঁদের আরও আশা, সভাপতি আন্দোলন নিয়ে নিশ্চয়ই সদর্থক কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন। দার্জিলিঙে রমেশ লামা নামে গুরুঙ্গপন্থী এক নেতার বাড়িতে শনিবার রাতে পুলিশ তল্লাশি করতে গিয়ে জানালার কাচ ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ। পুলিশ তা নিয়ে কিছু বলতে চায়নি।