শহিদ সুবোধ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
চোদ্দো প্রদীপ জ্বলল না নদিয়ার প্রত্যন্ত প্রান্তের গ্রামটির অধিকাংশ বাড়ির দাওয়ায়। সুদূর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা এলাকায় পাক সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন গ্রামের ছেলে সুবোধ ঘোষ। মাত্র ২৪ বছরের এই তরুণ সেনাকর্মীর মৃত্যুর খবর আসার পর থেকে তেহট্টের সেই রঘুনাথপুর গ্রাম শোকস্তব্ধ। আলোর উৎসবের যাবতীয় আনন্দ-উৎসাহ যেন নিভে গিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে গানারের পদে ছিলেন সুবোধ। নিজের চেষ্টাতে অল্প বয়সেই চাকরি পেয়েছিলেন। শুক্রবার বিকেল চারটে নাগাদ তাঁর বাড়িতে ফোন করে মৃত্যুর খবর জানানো হয়। তার পর থেকে শুধু ওই পরিবারে নয়, গোটা গ্রামে শুধুই শোক, হাহাকার আর চোখের জল। গ্রামের বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন সুবোধের বাড়ি। গত জুলাই মাসে তিনি বাড়ি এসেছিলেন এক মাসের কিছু বেশি সময়ের জন্য। গত বছর বিয়েও করেছিলেন। তিন মাসের কন্যাসন্তান রয়েছে তাঁর।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই উত্তর কাশ্মীরের বারামুলায় উরি সেক্টরে পাক বাহিনীর হানা শুরু হয়। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও।
গুলিগোলার লড়াইয়ে আরও বেশ কয়েক জনের সঙ্গে প্রাণ হারান সুবোধ। সুবোধের মা বাসন্তী ঘোষ কাঁদতে-কাঁদতে বলেন, ‘‘বিকেলে কাশ্মীর থেকে ফোন আসে। ফোনে জানানো হয়, পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর গুলিতে আমার ছেলে মারা গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: গুজরাতে হানা, উদ্ধার পাচার হওয়া বঙ্গকন্যা
সুবোধের স্ত্রী অনিন্দিতা ঘোষের কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবার মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। আমার স্বামী বার-বার ফোন করে মেয়ের খোঁজ নিয়েছে। কিন্তু
আজ সকাল থেকে ফোন বন্ধ ছিল। তখনও বুঝিনি আমার এমন সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে।’’