স্মৃতি ইরানি। —ফাইল চিত্র।
দেশের প্রথম সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী তিনি, যিনি নিজে সংখ্যালঘু শ্রেণিভুক্ত নন। এটাই ভারতের জাতি, ধর্মের সাম্যের নিদর্শন বলে দাবি করলেন স্মৃতি ইরানি। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফিকি এফএলও তথা বণিকসভাটির মহিলা সদস্যদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বসেন কেন্দ্রের নারী, শিশু উন্নয়ন এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী স্মৃতি। বলেন, “এক জন রামভক্ত যিনি সংবিধানে বিশ্বাসী এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রশাসন চালাচ্ছেন, তিনি রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছেন। এটা সব থেকে গৌরবের। আমি হিন্দু। দেশের প্রথম নন-মাইনরিটি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী। এটাও আজকের ভারতে সকলের সমানাধিকারের প্রমাণ।”
সেই সঙ্গে স্মৃতির সংযোজন, “মন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠার ঠিক আগে প্রধানমন্ত্রী শিখদের উৎসব উদ্যাপন করছিলেন। আমিও মদিনায় গিয়েছিলাম। অনেক অহিন্দু প্রাণপ্রতিষ্ঠা উৎসবে শামিল হয়েছিলেন। পার্সিদের প্রধান পুরোহিতও অযোধ্যায়, কিন্তু সনিয়া গান্ধী গেলেন না!” বিরোধীদের মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গেও কংগ্রেস-শিবিরকে আক্রমণ শানাতে কসুর করেননি স্মৃতি। বলেন, “যাঁরা প্রাণপ্রতিষ্ঠার আমন্ত্রণ হেলায় ফিরিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা বলছেন মন্দিরে যেতে দিচ্ছে না? অযোধ্যা বিশ্বাসস্থল! ভারতীয় হিন্দুরা ১৮৮০র দশক থেকে এই নিয়ে লড়াই করেছেন। ঈশ্বরের ইচ্ছায় এই ভাবে রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল। রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে সব হিন্দুই সুযোগ পেলে অযোধ্যা যেতেন। আস্থার এই জায়গাটিই কেউ কেউ বোঝেন না।”
প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় অবশ্য পাল্টা বলছেন, ‘‘অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনে শঙ্করাচার্যেরাও যাননি! পূজারীদের সরিয়ে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী হাতে তুলে নেন। কোনও ধর্ম বা বিশ্বাসকে অশ্রদ্ধার প্রশ্ন নয়। ধর্মকে নরেন্দ্র মোদীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন, সংবিধানের আদর্শ লঙ্ঘন করেছেন, কংগ্রেসের প্রতিবাদ সেখানে। স্মৃতিরা এটা বুঝলে এই অসাংবিধানিক এবং অনৈতিক কাজটাই করতেন না!’’
সদ্য রামমন্দির উদ্বোধনের আবহে বণিকসভার মহিলা সদস্যেরা অনেকেই ‘জয় শ্রী রাম’ বলে নিজের বিজেপি সমর্থক পরিচয় দিয়ে স্মৃতির সঙ্গে কথা বলেন। নিজেকে বাঙালি মায়ের মেয়ে পরিচয় দিয়ে কথা বলেন স্মৃতি। কোনও বিতর্ক তৈরি হলেই মহিলা রাজনীতিবিদদের পোশাক, ঘড়ি নিয়ে কেন আলোচনা শুরু হয়ে যায়? স্মৃতির সপাটে জবাব, “দুর্নীতির ক্ষেত্রে লিঙ্গ পরিচয়কে ঢাল করা যায় না। দুর্নীতিগ্রস্ত মেয়েদের মেয়ে বলে করুণা করা মানে আসলে সার্বিক ভাবে মেয়েদের অসম্মান করা।” প্রশ্নকর্তা এর পরে বলেন, শুধু মহুয়া মৈত্রের কথা তিনি বলছেন না। স্মৃতির খোঁচা, “আমি দুর্নীতির কথা বললাম, আপনি মহুয়া মৈত্রের নাম করলেন।”