খুশিতে ডগমগ পার্থ আদালত থেকে বেরিয়ে এসে পুলিশের গাড়িতে ওঠেন। নিজস্ব চিত্র।
আদালতে ঢুকেছিলেন একমুখ হাসি নিয়ে। বেরোলেন যখন, তখনও মুখে হাসির ফোয়ারা। জামিন পাননি। তবে সমর্থকদের দেখতে পেয়েছেন। যে সমর্থকদের পেয়ে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত থেকে বেরোতে দেখা গেল এক অন্য পার্থকে। কারণ আদালতের বাইরে তখন তাঁর নামে জয়ধ্বনি চলছে, ‘‘যব তক সূরয-চাঁদ রহেগা, পার্থদা কা নাম রহেগা’’। পাশাপাশি ওঠে ‘বন্দেমাতরম’ স্লোগান। আদালতের লকআপ থেকে স্লোগান দিচ্ছেন তাঁর সঙ্গেই প্রেসিডেন্সি জেলে ভর্তি বন্দিদের একাংশ। আর তা শুনেই খুশিতে ডগমগ করতে করতে বেরিয়ে এসে পুলিশের গাড়িতে ওঠেন পার্থ।
গাড়িতে উঠে এ-ও জানিয়ে দিলেন—তিনি দলের সঙ্গেই রয়েছেন। দল তাঁর সঙ্গে আছে কি না জানাতে চাওয়া হলে পার্থ বলেন, ‘‘যাঁরা স্লোগান দিচ্ছে, তাঁদের জিজ্ঞাসা করুন। আমি মানুষের সঙ্গে আছি। আমি নিজে দলের সঙ্গে আছি।’’
কোর্ট লকআপ থেকে বেরোনোর সময় তিনি যোগ করেন, ‘‘জনগণও আমার সঙ্গে রয়েছে। সত্য এক দিন উদ্ঘাটিত হবেই।’’
বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে ঢোকার সময়ও পার্থকে দেখা গিয়েছিল অন্য মেজাজে। অন্য দিনের মতো চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন মুখ তাঁর ছিল না। দলের কর্মীদের শুভেচ্ছাবার্তাও জানিয়েছিলেন পার্থ। অভিনন্দন জানিয়েছিলেন বেহালাবাসীকেও। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বলেন, ‘‘আমি সবার আগে ২০২৩-এর শুভ নববর্ষের এবং তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে তৃণমূলের সব কর্মীকে আগাম শুভেচ্ছা জানাই। সকলকে ইংরেজি নতুন বর্ষের শুভেচ্ছা জানাই। বেহালা আমার এলাকা। সেই বেহালাবাসীদেরও অভিনন্দন জানাই। এবং বহু প্রতীক্ষিত জোকা থেকে তারাতলা মেট্রো রেল চালু হোক। আমাদের বহু দিনের শখ। তা যেন পূর্ণতা পায়।’’
পার্থ জেলে যাওয়ার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, দল কি আদৌ পার্থের সঙ্গে রয়েছে? তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই তৃণমূল নেতারা তাঁর সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বাড়াতে শুরু করেছেন বলেও দাবি উঠেছিল। কিন্তু পার্থ বার বার পার্থ জানিয়েছেন, তিনি দলের সঙ্গেই আছেন এবং দলের প্রতি তিনি অনুগত। শুভেন্দু অধিকারীর ‘ডিসেম্বর ডেডলাইন’ মন্তব্য উড়িয়ে দিয়েও তিনি বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূলের কেউ কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। কেউ পারবে না।’’
বৃহস্পতিবার আলিপুরের বিশেষ আদালতে ঢোকার সময় এবং বেরোনোর সময়ও পার্থ বোঝালেন দলের প্রতি তাঁর আনুগত্যে এক ফোঁটা খাদ নেই।